রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
মুকসুদপুর পৌরসভার সেবা কার্যক্রম স্থবির, চরম দুর্ভোগে পৌরবাসী দেশের মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শেরপুর প্রেসক্লাবের স্মারকলিপি প্রদান সাভারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল অষ্টাদশ জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫ দুর্নীতিমুক্ত পৌরসভা গড়তে সহযোগিতা চাই -জয়নাল আবেদীন আন্দোলনে আহত আলাউদ্দিন পাননি কোনো সহযোগিতা, মাথায় বয়ে বেড়াচ্ছেন গুলি ৩৮ প্রজাতির ৭ হাজার ৮৭০টি পাখির দেখা মিলেছে জামালপুরের মাদারগঞ্জে গ্যাসকূপ খনন কাজ উদ্বোধন দুপচাঁচিয়া শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে এতিমদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শাহীন স্কুল বগুড়া শাখার আয়োজনে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পিঠা উৎসব

নব আনন্দে বাংলা বর্ষবরণ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২২

দু’বছর পর পহেলা বৈশাখে আবার বর্ণিল উৎসবে মেতেছে দেশ। নতুন বাংলা বর্ষের প্রথম দিনের ভোরেরআলো রাঙিয়ে দেয় নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। রাজধানীসহ সারাদেশ ছিল বর্ষবরণের নানা আয়োজন। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে গত বৃহস্পতিবার যুক্ত হয়েছে নতুন বাংলা বর্ষ ১৪২৯।
এদিন আনন্দঘন পরিবেশে নব আনন্দে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উয্যাপিত হয় নববর্ষ। জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি’ এভাবে এদিন আহ্বান জানায় বাঙালি।‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৯’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনও বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ছায়ানট রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে রামকেলি রাগ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ছায়ানটের অনুষ্ঠান শুরু হয় । করোনা অতিমারির কারণে গত দু’ বছর রমনার বটমূলে বর্ষবরণের ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী প্রভাতি সংগীতানুষ্ঠানটি হতে পারেনি। করোনা মহামারির দুঃসময় অতিক্রম করে জীবনে প্রায় ফিরে আসছে স্বাভাবিক কর্মপ্রবাহ। নতুন বছরে এ নতুন বাস্তবতাকে তুলে ধরতে আনন্দের গান নিয়ে সাজানো হয় এবারের ছায়ানটের গানের অনুষ্ঠান। মূল ভাব ছিল ‘নব আনন্দে জাগো’। ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুন এ নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন। নব্বই বছরে পা রাখা সন্জীদা খাতুন শারীরিক দুর্বলতায় এবার অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত হতে পারেননি। শেষে ধারণ করা তাঁর গাওয়া ‘নব আনন্দে জাগো’ গানটি বাজিয়ে শোনানো হয়। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী । অনুষ্ঠানে সম্মেলক কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত ‘মন, জাগো মঙ্গললোকে’ আহির ভৈরব রাগে এবাদুল হক সৈকতের সেতারবাদন, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী পরিবেশন করেন নজরুল সংগীত ‘অরুণকান্তিকে গো যোগী ভিখারি’। তোড়ি রাগে ছোট আলাপ শোনান বিটু কুমার শীল। সুস্মিতা দেবদনাথ পরিবেশন করেন নজরুলর ‘জাগো জাগো খোলো গো আঁখি’। এছাড়াও একক সংগীত পরিবেশন করেন অন্যান্য শিল্পিরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টার এ অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুলপ্রসাদ সেন, রজনীকান্ত সেন এই পাঁচ কবির গানের সঙ্গে লালন সাঁই, গুরুসদয় দত্তের ব্রতচারীর গান, গিরীন চক্রবর্তীর পল্লীগীতি এবং নুরুল ইসলাম জাদিদের ভাওয়াইয়া দিয়ে সাজানো হয়েছিল ছায়ানটের অনুষ্ঠান মালা । সাথে ছিল আবৃত্তি ও পাঠ ।
বাংলা নতুন বছরকে বরণ উপলক্ষে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়েছে। এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল ‘নির্মল করো, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে। সকাল নয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকার সড়কদ্বীপের সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরুহয়। শোভাযাত্রা শুরুর আগে বেজে ওঠে ঢাক। মুখোশ, টেপাপুতুল, মাছ–পাখির প্রতিকৃতিসহ লোকসংস্কৃতির নানা উপাদান ছিল এবারের শোভাযাত্রায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন–সংলগ্ন স্মৃতি চিরন্তন চত্বর ঘুরে আবার টিএসসিতে এসে শোভাযাত্রা শেষ হয় । পরে শোভাযাত্রায় প্রদর্শিত শিল্পবস্তু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে যাওয়ার পর ঢাকের তালে উচ্ছ্বাসে মাতেন শিক্ষার্থীরা।
পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটির দিন। এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে দেশের সকল জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী র‌্যালি আয়োজন করে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা আজ শুরু হয়েছে। বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে নববর্ষ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। সকল সরকারি-বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার এবং বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি চ্যানেলসমূহ রমনা বটমূলে ছায়ানট আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করছে।
পয়লা বৈশাখ আমাদের সকল সঙ্কীর্ণতা, কুপম-ুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভিতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যোমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়। অন্য দিকে পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সার্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদ্যাপিত হয় নববর্ষ।-বাসস




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com