দুদিন স্থিতিশীল থাকার পর ফের বাড়ছে হবিগঞ্জের লাখাইয়ে ধলেশ্বরী নদীর পানি। উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তা হাওড়ে প্রবেশ করছে। ইতোমধ্যে ওই উপজেলার ৯০ হেক্টর জমির আধাপাকা বোরো ধান পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এদিকে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কাঁচা আধাপাকা মিলিয়ে মাত্র ২৪ শতাংশ ধান কাটতে পেরেছেন কৃষকরা। শ্রমিক সংকটের কারণে কাটা যাচ্ছে না ধান। কৃষকরা জানান, নদীর পানি হাওড়ে প্রবেশ করে উপজেলার অন্তত ১শ হেক্টর জমির আধাপাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে তারা ধান কাটতেও পারছেন না। অন্য বছর যে শ্রমিক ১ হাজার টাকায় পাওয়া যেত, এ বছর তা দিতে হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। লাখাই’র উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য জানান, লাখাই সদর ইউনিয়নের শিবপুর, সুজনপুর, বারচর, মাদনা, সন্তোষপুর, কামালপুর, রবিরকোণা, নোয়াগাও হাওড়ের ৯০ হেক্টর বোরো জমি পুরোপুরি তলিয়ে গেছে। আংশিক তলিয়ে গেছে ২০০ হেক্টর। তবে ইতোমধ্যেই এসব জমির ৩৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. আশেক পারভেজ জানান, জেলায় হাওড়ে এখনো পর্যন্ত ২০ শতাংশ এবং নন হাওড়ে ৪ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। অর্থাৎ জমির পরিমাণ হাওড়ে ৯ হাজার হেক্টর এবং নন হাওড়ে ৩ হাজার হেক্টর। তিনি বলেন, নতুন করে নিমজ্জিত হয়েছে মাদনা এলাকার জুয়ারিয়া বিল। এ বিলের ৮৫ শতাংশই কেটে নেওয়া হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, লাখাইয়ে এ বছর বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু লাখাই সদর ইউনিয়নে হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর জমি আবাদ হয়। কিছু কিছু জমিতে প্রায় ৬০ শতাংশ ধান পেকেছে। তবে বেশিরভাগ জমির ধান অর্ধেকও পাকেনি। এদিকে ভারতের আসাম, চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ধলেশ্বরী ও কালনী নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। এতে লাখাই উপজেলার হাওড়ে পানি প্রবেশ করে বোরো ধান তলিয়ে যেতে থাকে। দুই দিন পানি স্থিতিশীল থাকলেও বুধবার ফের নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে আরও ২৫ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়। এখনো পর্যন্ত এ উপজেলার ৯০ হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে।