বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

অসাধু মজুতদারের শাস্তি ছাড়া মজুতদারী বন্ধ হবে না 

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২

গুদামে তেল রাখলেই কি অবৈধ মজুতদার?

সম্প্রতি ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতার কারণে আলোচনায় এসেছে তেলের মজুত ইস্যু। দেশের বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হচ্ছে হাজার হাজার লিটার তেল। প্রশ্ন উঠেছে, গুদামে তেল রাখা কি অবৈধ? যদি তাই হয় তবে পাইকারি বিক্রেতারা তেল রাখবেন কোথায়, আর খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহই বা করবেন কীভাবে?
দেশে এখন আলোচিত বিষয় হচ্ছে সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও সংকট। মজুতদারদের কারসাজিতে ভোজ্যতেলের সংকট দূর করতে দেশজুড়ে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, দুই বছরের সাজা ও জরিমানাতেও অসাধু ব্যবসায়ীদের লাগাম টানা যাচ্ছে না। অথচ জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ নেই বিশেষ ক্ষমতা আইনের। আইনবিদদের মতে, বিশেষ এই আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে অসাধু মজুতদারদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা পর্যন্ত হতে পারে। এটা করা হলে তাদের মনে ভীতির সৃষ্টি হবে এবং কমে যাবে তাদের অসাধু মনোভাব। অবৈধ মজুতদারি এবং কালোবাজারির শাস্তি সম্পর্কে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪-এর ২৫(১) ধারায় বলা হয়েছে‘মজুতদারি বা কালোবাজারির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে সেই ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা ১৪ বছর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ডে ও তদুপরি জরিমানা দণ্ডেও দণ্ডিত হবে। তবে শর্ত থাকে যে মজুতদারির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করে যে আর্থিক বা অন্যবিধ লাভ করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং সে অন্য কোনও উদ্দেশ্যে মজুত করেছিল, তবে সে তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে ও তদুপরি জরিমানা দণ্ডে দণ্ডিত হবে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবির বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বল্প সাজা দিয়ে অপরাধকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এত বড় ঘৃণিত অপরাধের বিরুদ্ধে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে না।’ এ বিষয়টি শিগগিরই হাইকোর্টকে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি। বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ডের সাজা হলে দোষী ব্যক্তিকে ৩৪ (ক) ধারা অনুসারে, ফাঁসি দিয়ে বা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে গুলি করে দণ্ড কার্যকর করারও বিধান রয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে নয়, অসাধু মজুতদারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করার পক্ষে মত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেটিই হোক না কেন, শুধু জরিমানা করে ছেড়ে দিলে দ্রব্যমূল্য কমবে না। স্বল্প সাজা পাওয়ায় অনেকেই অপরাধ কর্মকাণ্ডে নিরুৎসাহিত হচ্ছে না। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন বা দণ্ডবিধির প্রয়োগ করতে হবে।’ এদিকে সময়ে সময়ে সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং সেল গঠন ও নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী রিট দায়ের করেন। রিটকারীরা হলেন অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, সৈয়দ মহিদুল কবীর ও মোহাম্মদ উল্লাহ। ওই রিটের শুনানিকালে সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যারা কুক্ষিগত করেন এবং জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টিকারীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। রিটকারীদের অন্যতম আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবীর বলেন, ‘ঈদের আগে রিটের শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। অতি দ্রুত আমরা রিটটি শুনানির উদ্যোগ নেবো।’
জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, ‘মজুতদারদের বিরুদ্ধে যে জরিমানা হচ্ছে সেটা আইন মেনেই করা হচ্ছে।’

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (১)-এ বলা হয়েছে, ‘মজুতদারি অথবা কালোবাজারির অপরাধে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি মৃত্যুদ- অথবা যাবজ্জীবন কারাদ- অথবা ১৪ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। সেই সঙ্গে তাকে জরিমানাও করা যাবে।’ এদিকে মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির বিধান থাকলেও তা প্রয়োগ করা হচ্ছে না। যার কারণে মজুতদারিও বন্ধ হচ্ছে না বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। তারা মনে করেন জরিমানা করে দায়সারা শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে পারলে মজুতদারি বন্ধ হবে বলে মনে করেন তারা। এ বিষয়ে ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ বলেন, ‘১৯৭৪ সালের বিশেষ আইন এখনই প্রয়োগ করা উচিত। কেননা এই জরিমানার মাধ্যমে গুরু অপরাধে লঘু দণ্ড দেওয়া হচ্ছে। কঠিন সাজার বিধান প্রয়োগ করলে মজুতদারি বন্ধ হবে এবং বাজারে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে মনে করেন তিনি।’ এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে সরাসরি মজুতদারির শাস্তির বিধান নেই। যে অপরাধের জন্য যে আইন সেটিই প্রয়োগ করা উচিত। মজুতদারি গুরুতর অপরাধ। এর ফলে জন জীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। মজুতদারির জন্য জরিমানা বড় অপরাধে ছোট সাজা। তাই বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করা হলে এই অপরাধ কমবে বলে মনে করেন তিনি।
গুদামে তেল রাখলেই কি অবৈধ মজুতদার? সম্প্রতি ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতার কারণে আলোচনায় এসেছে তেলের মজুত ইস্যু। দেশের বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হচ্ছে হাজার হাজার লিটার তেল। প্রশ্ন উঠেছে, গুদামে তেল রাখা কি অবৈধ? যদি তাই হয় তবে পাইকারি বিক্রেতারা তেল রাখবেন কোথায়, আর খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহই বা করবেন কীভাবে? তবে এসব প্রশ্নের উত্তর আছে আইনেই।
প্রচলিত আইনে বলা হয়েছে, একজন পাইকারি বিক্রেতা সর্বোচ্চ ৩০ মেট্রিক টন পরিমাণ পাম ও সয়াবিন তেল সর্বোচ্চ ৩০ দিন মজুত রাখতে পারবেন। আর একজন খুচরা বিক্রেতা সর্বোচ্চ ৫ টন পরিমাণের পাম ও সয়াবিন তেল সর্বোচ্চ ২০ দিন মজুত করতে পারবেন। একইভাবে একজন আমদানিকারকও তার মোট আমদানিকৃত পাম বা সয়াবিন তেলের ২৫ ভাগ সর্বোচ্চ ৬০ দিন পর্যন্ত মজুত রাখতে পারবেন। ২০১১ সালের ৫ মে জারি করা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীণ সচিব বরুন দেব মিত্র স্বাক্ষরিত গেজেট (সরকারের খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এসআরও ১১৩ আইন-২০২২ (কন্ট্রোল অব কমোডিটিকস অ্যাক্ট-১৯৫৬) এর (২) ক (৪) ধারা বলে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গেজেটের ২ এর ৬ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- এই আদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে চাল, গম, ও গমজাত দ্রব্যাদি ছাড়াও ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পামতেল) চিনি ও ডালকে খাদ্য সামগ্রী হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সরকারের খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এসআরও ১১৩ আইন-২০২২ (কন্ট্রোল অব কমোডিটিকস অ্যাক্ট ১৯৫৬) (অ্যাক্ট নং ১ অব ১৯৫৬) এর সেকসন ৩ এর ক্ষমতাবলে সরকার মজুতের পরিমাণ ও মেয়াদ নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর শর্তাবলিতে বলা হয়েছে, ‘সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত লাইসেন্স ব্যাতিরেকে কোনও ব্যবসায়ী এক মেট্রিক টনের অধিক খাদ্যশস্য বা খাদ্য সামগ্রী তার অধিকারে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন না।’ খাদ্যশস্য বলতে এখানে ধান ও চালকে বোঝানো হয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবসায়ীদের মজুতকৃত যে পরিমাণ সয়াবিন তেল ও পামরেতল উদ্ধার করা হচ্ছে সেক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য নয়। এর কারণ ব্যাখ্যা করে সূত্রটি বলছে, ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী মিল কর্তৃপক্ষ সরকারের অনুরোধে রমজান এবং ঈদের বিশেষ বাড়তি চাহিদা পূরণে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত ভোজ্যতেল সরবরাহ করেছে। যা কোনোভাবেই রোজার পরে বা ঈদের পরে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুত করতে পারবেন না। এসব ভোজ্যতেল সরবরাহ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে বিক্রি করতে হবে।
সূত্রটি আরও বলছে, ব্যবসায়ীরা সেই বিশেষ বরাদ্দকৃত ভোজ্যতেল রমজানে এবং ঈদের সময় বিক্রি না করে বাড়তি মুনাফার লোভে মজুত করে রেখেছেন- যা শর্তের বরখেলাপ। এ কারণেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বাজারে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবসায়ীদের লুকিয়ে রাখা ভোজ্যতেল উদ্ধার করছে। এবং উদ্ধারকৃত ভোজ্যতেল গায়ে লেখা দামে তাৎক্ষণিক উপস্থিত ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। অপরদিকে চাল ও গমের ক্ষেত্রে সরকারের মজুত আইনের নীতিমালায় এর ভিন্নতা রয়েছে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী একপক্ষকালে (১৫ দিনে একপক্ষ) একটি রাইস মিল যে পরিমাণ ধান থেকে চাল প্রসেসিং করতে সক্ষম, ওই সময়ে মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতার ৫ গুণ ধান এবং ২ গুণ চাল মিল মালিকরা মজুত রাখতে পারবেন। এই পরিমাণ ধান-চাল সর্বোচ্চ ৩০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। ৩০ দিনের বেশি মজুত রাখলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘বিদ্যমান মজুত নীতিমালা অনুযায়ী একটি মিলের এক পক্ষকালের ক্যাপাসিটির ৫ গুণ ধান ও ২ গুণ চাল মজুত রাখতে পারবেন। এই পরিমাণ ধান-চাল রাখতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩০ দিন পর্যন্ত। এর চেয়ে পরিমাণে বেশি ধান-চাল রাখলে বা এই সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে মজুত রাখলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।’
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো, মেজর হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিশেনের সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী বলেন, ‘ধরা যাক, একটি মিলের এক পক্ষকালের ক্যাপাসিটি ১০ কেজি। ওই মিল কর্তৃপক্ষ এর ৫ গুণ অর্থাৎ ৫০ কেজি ধান এবং চাল ২ গুণ অর্থাৎ ২০ কেজি সর্বোচ্চ ৩০ দিন মজুত রাখতে পারবেন। এর বেশি হলেই তা অপরাধ।’
মজুত কী, বিদ্যমান মজুত আইনে কী আছে: ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মজুতদারি নিষিদ্ধ করে এই অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের ২ (ঙ) ধারায় মজুতদারির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘মজুতদারি বলতে বোঝায়, কোনও আইন দ্বারা বা আইনের আওতায় কোনও ব্যক্তি মজুত বা গুদামজাত করার সর্বোচ্চ পরিমাণের বেশি দ্রব্য মজুত বা সংরক্ষণ করা।’ এ আইনের ২৫ (১) ধারার বিধানে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘কেউ মজুতদারি বা কালোবাজারে লেনদেনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে তার আজীবন কারাদ- বা ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। যদি প্রমাণ হয় যে, মজুতদার কোনও লাভের জন্য পণ্য মজুত করেনি, তাহলে ৩ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।’
এদিকে ইস্ট বেঙ্গল অ্যাক্ট-এর আওতায় অতি প্রয়োজনীয় কিছু পণ্যের সরবরাহ, বিতরণ ও মজুত নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৯৫৩ সালে দ্য অ্যাসেনসিয়াল আর্টিকেলস (প্রাইস কন্ট্রোল অ্যান্ড এন্টি হোর্ডিং) অ্যাক্ট ১৯৫৩ শিরোনামে এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়। এই আইনে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বলতে দ্য কন্ট্রোল অব অ্যাসেনসিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট, ১৯৫৬-এর ধারা-২-এ উল্লিখিত পণ্যকে বোঝানো হয়েছে। দ্য অ্যাসেনশিয়াল আর্টিকেলস (প্রাইস কন্ট্রোল অ্যান্ড এন্টি হোর্ডিং) অ্যাক্ট, ১৯৫৩-এর ৩ ধারায় বলা হয়েছে, ‘ব্যবসায়ীরা সুবিধাজনক জায়গায় বা নিজেদের দোকান ও গুদামের সামনে পণ্যের সর্বোচ্চ মূল্য তালিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য থাকবে। নির্ধারিত সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রয়ের তারিখ ও মেয়াদ সরকার নির্ধারণ করে দিতে পারবে।’ ধারা ৮-এ বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যবসায়ী সরকারের দেওয়া পূর্ব-কর্তৃত্ব ছাড়া কোনও ব্যক্তির কাছে কোনও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বিক্রি আটকে রাখতে পারবে না বা বিক্রি করতে অস্বীকার করতে পারবে না। এ আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ১ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’ সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন ও আজকের পত্রিকা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com