শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২২ পূর্বাহ্ন

শ্রমিক সংকটে ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

রাশেদুল ইসলাম, শ্রীবরদী (শেরপুর):
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৪ মে, ২০২২

শেরপুরের শ্রীবরদীতে শ্রমিক-সংকটের কারণে ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা। দ্বিগুণ মজুরি দিয়েও ধানকাটা শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ঝড়-বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নিচু জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। দ্রুত ধান কাটতে না পারলে পানিতে তলিয়ে যাবে। ফলে চরম দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বলা হয়েছে, কৃষকদের মধ্যে যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। আরও বেশি কৃষিযন্ত্র বিতরণ করা হলে শ্রমিক-সংকট কেটে যাবে।
জানা গেছে, শ্রীবরদী এলাকায় বেশির ভাগ ধান কাটার কাজে যোগ দেওয়া শ্রমিকেরা আসেন গাইবান্ধা, রংপুর, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জের চরাঞ্চল থেকে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা খুবই কম। ফলে স্থানীয় ধানকাটা শ্রমিকদের চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই দ্বিগুণ, তিন গুণ মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ধানকাটা শ্রমিকেরা অন্য কাজ করায় এবং বহিরাগত শ্রমিক না আসায় শ্রীবরদীতে দেখা দিয়েছে চরম শ্রমিক-সংকট।
এ ছাড়া শ্রমিকের মজুরি আকাশচুম্বী। ৪০০-৫০০ টাকার শ্রমিক এখন ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা। কোথাও কোথাও ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়-বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে একর প্রতি ধান কাটার জন্য শ্রমিকের মজুরি সাত হাজার থেকে নয় হাজার টাকা বেশি দিতে হচ্ছে কৃষকদের।
পোড়াগড় দক্ষিণ পাড়া গ্রামের শ্রমিক আমির আলী জানান, ‘আমি আগে ধান কাটাসহ বিভিন্ন কাজ করতাম। বর্তমানে অটোরিকশা চালাই। ধান কাটার কাজে অনেক কষ্ট। অটোরিকশা চালানো সহজ। এ ছাড়া আয়ও বেশি।’
ষাইটকাকড়া গ্রামের ধানকাটা শ্রমিক মোজাফফর আলী বলেন, ‘ধানকাটা শ্রমিক পেশা বদল করায় শ্রমিক-সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া একই সময়ে ধান কাটা শুরু হয়। তাই শ্রমিকের চাহিদা বেশি থাকে।

উপজেলার মথুরাদী গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, ‘আমি তিন একর জমিতে ইরি ও বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। দুই একর জমির ধান শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এক একর জমির ধান আংশিক নষ্ট হয়েছে। আংশিক নষ্ট ধান কাটতে শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে কিছুই থাকবে না।

জালাকাটা গ্রামের কৃষক আলম মিয়া বলেন, ‘আমি বর্গা নিয়ে প্রায় ২ একর জমিতে ধান রোপণ করেছিলাম। শিলাবৃষ্টি আমার আংশিক ধান নষ্ট করে দিয়েছে। বাকি ধান কাটার জন্য কোনো শ্রমিক পাচ্ছি না।

সিংগাবরুনা ইউনিয়নের জলঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা পাহাড়ি এলাকায় বাস করি। ধান চাষ করে খুবই বিপাকে পড়েছি। আমাদের এলাকায় শিলাবৃষ্টি কম হলেও শ্রমিক-সংকট ও মজুরি দ্বিগুণ হওয়ায় ধান কাটা খুবই সমস্যা হয়ে গেছে।’ মেশিন দিয়ে কেন ধান কাটছেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ধানকাটা মেশিন কম। এ ছাড়া জলাবদ্ধ জমিতে মেশিন দিয়ে ধান কাটতে সমস্যা হয়।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ভর্তুকি মূল্যে যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়। আরও বেশি পরিমাণে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ যন্ত্র বিতরণ করা হলে শ্রমিক-সংকট কেটে যেতে পারে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com