বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন

বংশাই ও ঝিনাই নদীর পানি বৃদ্ধি, ভাঙন আতঙ্কে ১০ গ্রামের মানুষ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৫ মে, ২০২২

কয়েক দিন ধরে টানা বর্ষণ ও উজানে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানি আসায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত বংশাই ও ঝিনাই নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে প্রচ- স্রোতে নদীর পাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। ফলে তীরের ১০-১২টি গ্রামের মানুষের মধ্যে ভাঙন-আতঙ্ক শুরু হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মির্জাপুর পৌর এলাকার পোস্টকামুরী সওদাগরপাড়া, বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়া, ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া, ফতেপুর, বানকাটা, চাকলেশ্বর, ত্রিমোহন, বৈলানপুর-পাতিলাপাড়া, সুতানড়ি, ফতেপুর উত্তরপাড়া ও ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল এলাকায় বর্ষা এলেই ভাঙ্গন শুরু হয়। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব এলাকার ১০ গ্রামের মানুষের মধ্যে নদীভাঙ্গন নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নদীভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করা ও শুকনো মৌসুমে সেতুটির পাশে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা আর বর্ষাকালে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালি উত্তোলনে বংশাই নদীর ওপর (পোস্টকামুরী সওদাগরপাড়ায়) নির্মিত আলহাজ একাব্বর হোসেন সেতুটি রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। উল্লেখিত নদীভাঙন কবলিত এলাকাগুলিতেও বর্ষা মৌসুমে বালি ও শুষ্ক মৌসুমে নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি হয় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
নদীর পানি বাড়ায় এরই মধ্যে মির্জাপুর পৌরসভার পোস্টকামুরী সওদাগরপাড়া, বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়া, গোড়াইলে ভাঙন শুরু হওয়ায় প্রায় শতাধিক পরিবার আতঙ্কে দিন পার করছে। যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। নদীভাঙ্গনের শিকার পৌর সদরের মজিবুর রহমান জানান, তার বাড়িটি ২৮ শতাংশ জমির ওপর ছিল। ভাঙনের ফলে মাত্র ২ শতাংশ অবশিষ্ট আছে। ভাঙন ঠেকাতে অনেকে নিজ উদ্যোগে বাঁশের বেড়া দিয়েও তেমন ফল পাচ্ছেন না।
বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়ায় বিসমিল্লাহ রাইস মিলের মালিক জহির হোসেন বলেন, তাদের ৫০ শতাংশ রাইস মিলের ৩০ শতাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে নিজ অর্থায়নে বালুর বস্তার (জিও ব্যাগ) রেখেছেন বলে তিনি জানান। থলপাড়া গ্রামের আবুল কাশেম খান বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি এবং কমা দুটোই আমাদের জন্য আতঙ্ক। এই দুই সময়েই আমাদের এলাকায় তীব্র নদীভাঙন শুরু হয়। গোড়াইল গ্রামের কুসুম, রফিক, আইন আলী মৃধা জানান, নদীভাঙ্গন বন্ধ না হওয়ায় ১৫/২০টি পরিবার ওই এলাকা থেকে বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। এছাড়া হাটফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় ব্লক বাঁধটির একাংশ স¤প্রতি ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিলে হাটফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি হুমকির মধ্যে পড়বে বলে এলাকাবাসী জানান। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় ব্লক বাঁধটি সংস্কারের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পানি কমলে কাজ শুরু হবে। তাছাড়া কোথাও ভাঙন দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগের মাধ্যমে তা ঠেকানোর ব্যবস্থা করা হবে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: হাফিজুর রহমান বলেন, নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের তাৎক্ষণিক ত্রাণের ব্যবস্থা রয়েছে এবং নদীভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com