একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বাস
পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে দেশের ভেতরের ও বাইরের অনেক চাপ ছিল। জনগণ ও তাদের আশীর্বাদ ছিল বলেই পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। গতকাল বুধবার (১ জুন) শেরে বাংলা নগরে এনইসি’র সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়ে গেলো। সেতু বাস্তবায়নে নানা স্ট্রাগল ও চাপের বিষয়ে একনেক সভায় খোলামেলা আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, জনগণ পাশে ছিল ও তাদের আশীর্বাদ ছিল বলেই পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। দেশের ভেতরের-বাইরের অনেক প্রতিকূলতা ছিল বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসব বিষয় আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। এম এ মান্নান প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে বলেন, সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা কাজটা করতে পেরেছি। এটা নিয়ে তিনি আনন্দে আপ্লুত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর অনেক বড় বড় অর্জন আছে। তবে পদ্মা সেতু একটি অন্যতম অর্জন।
প্রতিটি স্থলবন্দর আরও উন্নত করতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক স্থাপনা ও সিস্টেম বসাতে হবে। গ্রামীণ সড়ক বাস্তবায়নের দিকে নজর দিতে হবে। নতুন সড়ক বানানো প্রয়োজন। তবে বিদ্যমান সড়ক আগে সংস্কার করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকলে তা সবাইকে পরিশোধ করতে হবে। পাওনা না দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিতে হবে। বিদ্যুৎ বিল সরকারি-বেসরকারি সবাইকে দিতে হবে। সবাইকে অবশ্যই পে করতে হবে।’
একনেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন: জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রায় ২ হাজার ৬৬৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ের ৯টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। গতকাল বুধবার (১ জুন) প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দুই বছরের বেশি সময় পর সরাসরি একনেক মিটিংয়ে অংশ নিলেন। করোনা সংক্রমণের কারণে তিনি এতদিন ভার্চুয়ালি এ সভায় অংশ নিয়েছেন।
অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে “রূপকল্প ২০৪১: দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র সঞ্চয় যোজন” প্রকল্প; এবং “রংপুর জেলাধীন পীরগঞ্জ, হারাগাছ ও বদরগঞ্জ পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন” প্রকল্প; ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের “দারুল আরকাম ইবতেদায়ি মাদ্রাসা স্থাপন ও পরিচালনা” প্রকল্প; রেলপথ মন্ত্রণালয়ের “বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ৫০টি বিজি এবং ৫০টি এমজি যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন” প্রকল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের “ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের “বানৌজা শের-ই-বাংলা পটুয়াখালী স্থাপন (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের “রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকো’র আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন” প্রকল্প; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের “দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এসএএসইসি) সমন্বিত বাণিজ্য সুবিধা সেক্টর উন্নয়ন প্রকল্প: বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ (বিএলপিএ) অংশ “প্রকল্প; এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের “দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এসএএসইসি) সমন্বিত বাণিজ্য সুবিধা সেক্টর উন্নয়ন প্রকল্প: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অংশ” প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ুমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।