পিলারের মধ্যে ২টি পিলা ভেঙে গেছে। অন্য ২টি পিলারের কংক্রিট ধসে পড়ে কেবল রডের ওপর দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি। এ অবস্থায় যেকোনো মূহুর্তে সেতুটি ধসে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার গলিয়ারচর ও ছান্দ্রা গ্রমসহ কয়েকটি গ্রামের অধিকাংশ লোকজনের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এই সেতু। বর্তমানে প্রাণ ভয়ে লোকজন এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে চান না। পিলারের কংক্রিট নেই, রডগুলো ঝুলছে। অবিলম্বে সেতুটি নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন কয়েক গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীগণ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর’র (এলজিইডি) দাউদকান্দি উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো.মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ঝুকিপূর্ণ ব্রীজটি আমরা পরিদর্শন করেছি। এই সেতুটি মেরামতের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, মোট ৮ টি পিলারের ওপর ২০০০ সালের দিকে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির অর্থায়নে এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নদীর মধ্যে ৪টি পিলারের ওপর দাঁড় করা হয় সেতুটি। ৪টি পিলারের মধ্যে ২টি ভেঙ্গে গেছে এবং বাকি দু’টিতে কংক্রিট নেই বললেই চলে। পুরনো রডগুলো ঠাঁয় বের হয়ে নীচ দিয়ে ঝুলে রয়েছে। পার্শ্বের অন্য পিলারগুলোও দুর্বল হয়ে গেছে। বেশ কয়েক বছর আগেই সেতুর রেলিং-এর বেশিরভাগ ভেঙে গেছে। ভয়ে লোকজন সেতু দিয়ে তেমন একটা চলাচল করেন না। সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে থাকা তো দূরের কথা; অনেকে ভয়ে সেতুতে উঠতেও আগ্রহী হন না। কয়েক বছর ধরে সেতুটির পিলার ভেঙে এমন অবস্থায় পড়লেও এর সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ না নেয়ায় এলাকাবাসী হতাশ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন সেতুটি নির্মাণের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও পেপার পত্রিকায় এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক লেখালেখি হয়েছে। এতে লোকজন তাদের ক্ষোভ ও হতাশার কথা তুলে ধরেন। জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় এই সেতুটি দিয়ে গলিয়ারচর ছান্দ্রা গ্রামেরসহ পাশাপাশি আরো অন্যান্য গ্রামের সাধারণ জনগণ চলাচল করে থাকেন। এই নদী পথ দিয়ে বড় বড় বালুবাহি ভলগেট, ইটের ট্রলার সেতুর নিচে দিয়ে যাতায়াত করায় সেতুটি ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। তবে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে এমটাই জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকার জনসাধারণের দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজের নিচ দিয়ে যাতে কোন বড় ধরনের ট্রলার বা বালুর ভলগেট যেন নিচ দিয়ে চলাচল না করে,তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যেন দ্রুতই জরাজীর্ণ এই সেতুটিকে ভেঙ্গে নতুন করে সেতু নির্মাণ করা হয় এবং তারা এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এছাড়া ভৌগোলিকভাবে জিংলাতলি ইউনিয়নের জনগণের দ্রুত যোগাযোগের জন্য এই রাস্তাটি চলাচলে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে, জিংলাতলী ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত গ্রাম চান্দেরচর গলিয়ার চর, চর চারিপাড়া গ্রামের সাধারণ জনগণকে গৌরীপুর বাজার বা রায়পুর হয়ে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ ব্যাপারে জিংলাতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মোল্লা জানান, কালাডুমুর নদীর উপর নির্মিত মরণফাঁদ এই সেতুটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাব আমি উপজেলা সমন্বয় সভার মিটিংয়ে উত্থাপন করবো এবং এলজিইডি’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও তা জানাবো। জানতে চাইলে এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন বলেন, শুনেছি এই সেতুটি বর্তমানে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। তাই মরণফাঁদ রিস্কি এই সেতুটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন সেতু নির্মাণের ব্যাপারে স্থানীয় এমপির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বর্ষা মৌসুম শেষে সেতুটির দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।