বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্ষার পূর্ণিমার প্রভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ কারণে নিম্মাঞ্চল ও বরিশাল নগরের কিছু কিছু এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। মূলত জোয়ারের সময়ে পানি বাড়লেও ভাটায় তা কমে যায়। গত বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) পূর্ণিমা এবং বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলানুসন্ধান বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম। তিনি বলেন, বিভাগের মোট ২৩টি নদীর মধ্যে প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানি প্রবাহ এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০টি নদীর পানিই বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
এর মধ্যে বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ভোলা খেয়াঘাট এলাকার তেঁতুলিয়া নদীর পানি ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দৌলতখান উপজেলার সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, তজুমদ্দিন উপজেলার সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি ৯৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝালকাঠি জেলার বিশখালী নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর পানি ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, বরগুনা জেলার বিশখালী নদীর পানি ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, পাথরঘাটা উপজেলার বিশখালী নদীর পানি ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার এবং উমেদপুরের কঁচা নদীর পানি ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বিশখালী নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া বিপৎসীমার কাছাকাছি পানি প্রবাহিত হওয়া নদীগুলোর মধ্যে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। ঝালকাঠি জেলার বিশখালী নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার, পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। জলানুসন্ধান বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম বলেন, এটি বন্যা পরিস্থিতি না। নদী প্রধান বরিশাল বিভাগের বর্ষা মৌসুমের স্বাভাবিক চিত্র। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক প্রনব কুমার রায় বলেন, ভারতের উড়িষ্যা অঞ্চলে একটি লঘুচাপ বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু বরিশালে স্বাভাবিক আবহাওয়া বিদ্যমান। মূলত পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বর্ষা মৌসুমের জোয়ারের প্রভাবে।