মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

যে চার শ্রেণীর মানুষ পরকালীন বিপদমুক্ত

মো: নাঈম ইসলাম
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২

মহান আল্লাহ তায়ালা এই পৃথিবীতে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁরই ইবাদতের জন্য। কিন্তু বাস্তবে মানুষ আজ বিভক্ত হয়ে গেছে নানা পথে, নানা মতে। যারা মহান আল্লাহ তায়ালার পথের ওপর সীমাবদ্ধ তারাই কেবল পরকালীন সুখের ব্যাপারে সুসংবাদপ্রাপ্ত। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা পরকালীন সুখপ্রাপ্ত মানুষকে চারটি ভাগে ভাগ করেছেন। চলুন দেখে নেয়া যাক কারা কারা থাকছেন সে সৌভাগ্যবানদের তালিকায়-
১. এমন ব্যক্তি যারা ঈমান এনেছেন : ঈমান শব্দটি ব্যাপক অর্থবোধক একটি শব্দ। ঈমানের শাব্দিক অর্থ- বিশ্বাস স্থাপন করা, মেনে নেয়া। আর পারিভাষিক দিকে এর অর্থ এরকম- আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত ও তার রাসূল সা:-এর ওপর অবতীর্ণ যাবতীয় বিষয় অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেয়া আর সেগুলোকে কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করা।
সূরা আন-নিসার ১৩৬ নং আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি, তার রাসূলের প্রতি, আল্লাহ প্রদত্ত রাসূলের ওপর যে কিতাব দেয়া হয়েছে তার প্রতি ও আগে তিনি যে কিতাবগুলো নাজিল করেছিলেন তার প্রতি। যে ব্যক্তি আল্লাহ, তার ফেরেশতা, তার কিতাবসমূহ, তার রাসূলগণ ও পরকালকে অস্বীকার করল সে পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত হয়ে গেল।’
ইসলামে আরকানুল ঈমান বা ঈমানের মৌলিক স্তম্ভ হচ্ছে প্রধানত ছয়টি। উল্লেখ্য, আরকানুল ঈমান হচ্ছে এমন কিছু মোলিক বিষয়ের নাম যেগুলোর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা প্রতিটি ঈমানদারের জন্য আবশ্যক বা ফরজ।
এই মৌলিক স্তম্ভগুলো হলো : ১. আল্লাহর ওপর ঈমান; ২. ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান; ৩. আল্লাহ প্রদত্ত কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান; ৪. আল্লাহর প্রেরিত রাসূলদের ওপর ঈমান; ৫. আখিরাতের ওপর ঈমান তথা পুনরুত্থানের ওপর ঈমান এবং ৬. তাকদির বা ভাগ্যের প্রতি ঈমান। বান্দার ঈমান আনার অর্থ উপরিউক্ত সব বিষয়কে সাচ্চা দিলে মেনে নেয়া।
২. যারা সৎকর্ম করেন : মহান আল্লাহ তায়ালা সৎকর্মের বিষয়টি ঈমানের পরে নিয়েছেন। আসলে একজন মানুষের সৎকর্ম তখনই মহান আল্লাহর কাছে কবুল বা গ্রহণ হবে যখন তিনি ঈমানদার হবেন। ঈমানবিহীন ইবাদত তলাবিহীন পাতিলের মতো, সেখানে যতই কিছু রাখি না কেন তা পড়ে যাবে। তেমনি ঈমান ছাড়া যতই সৎকর্ম করা হোক না কেন তা মূল্যহীন। ইবাদতের ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা কেবল ঈমানদারদের ডাক দিয়েছেন। যেমন- সাওম পালনের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর সাওম ফরজ করা হয়েছে যেমনটি ফরজ ছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর।’
সাওম একটি ইবাদত যেটি পালনের আদেশ করা হয়েছে কেবল ঈমানদারদের ওপর। মোট কথা, ঈমান থাকা অবস্থায় যারা সৎকর্ম করবেন মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের পুরস্কৃত করবেন। আর তারাই প্রকৃত সফলকাম।

৩. হকের ব্যাপারে উপদেশকারী : বান্দা যদি ঈমানের মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর বিশ্বাস করে সৎকাজ সম্পন্ন করে তবে ব্যক্তিগত জীবনে ইসলামের ব্যাপারে দায়মুক্ত। তবে ইসলামের সার্বিক ক্ষেত্রে বান্দার দায়িত্ব এখানেই শেষ নয়। প্রতিটি ঈমানদার মানুষের ওপর তার সমাজ পরিবর্তনের দায়িত্ব রয়েছে। রয়েছে অন্যকে বোঝানোর, পরিবর্তনের, আহ্বানের দায়িত্বও। যেমন, সূরা আলে ইমরানের ১০৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত যারা (অন্যকে) কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে, সৎকাজের আদেশ করবে আর খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর এরাই প্রকৃত সফলকাম।’
অন্যত্র বলা আছে, ‘তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো ও নিজের পরিবার পরিজনকেও বাঁচাও। এ থেকে বোঝা গেল, বান্দা নিজেকে হকের পথে পরিবর্তন করার পাশাপাশি অন্যকেও হকের পথে আনার চেষ্টা করবে। এটি প্রতিটি মানুষের জন্য ফরজ।
৪. সবর বা ধৈর্যের ব্যাপারে উপদেশকারী : যেকোনো কিছু অর্জনের মূলমন্ত্র হচ্ছে ধৈর্য বা সবর। এই গুণ ছাড়া কোনো বিজয় অর্জন সম্ভব নয়। সবর ব্যাপক অর্থবহ একটি শব্দ। সবর বলতে জীবনের নানা পরীক্ষায় ও প্রতিকূলতায় নিজেকে শান্ত রাখাকে বোঝায়। আবার সবর বলতে আত্মা, প্রবৃত্তিকে পাপ থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টাকেও বোঝায়। মহান আল্লাহ তায়ালা ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন। এমনকি তিনি নিজেও ধৈর্যশীল মানুষদের সাথে আছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের সূরা আলে ইমরানের ২০০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা ধৈর্যধারণ করো, একে অন্যকে ধৈর্যের প্রতি উৎসাহিত করো (আল্লাহর পথে চলার), তৈরি থাকো এবং আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায়, তোমরা তাহলে মুক্তি পেয়ে যাবে।’ অর্থাৎ, পরকালে মুক্তির আরেক উপায় হলো ধৈর্যের ব্যাপারে উপদেশ দেয়া। ব্যক্তি জীবনে যারা ইসলামের ব্যাপারে ধৈর্যশীল এবং অন্যকেও এই ধৈর্যের ব্যাপারে উপদেশ ও উৎসাহিত করেন তাদেরকে মহান আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই পুরস্কৃত করবেন। ব্যক্তি জীবনে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের এ ব্যাপারে আরো বেশি জ্ঞান দান ও সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন, আমিন। লেখক : আরবি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com