মাল্টা চাষে সফলতার মুখ দেখেছেন কুড়িগ্রামের আবু রায়হান ফারুক। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে মনোযোগ দেন কৃষিতে। শুরু করেন সমন্বিত ফলের চাষ। দেশি ও বিদেশি নানান জাতের ফলের গাছ রয়েছে তার বাগানে। তার বাগানে দুই হাজার ৫০০ এর বেশি মাল্টা গাছ রয়েছে।
আবু রায়হান ফারুক কুড়িগ্রামের বেলগাছা ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে মাল্টা চাষ শুরু করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছয় একর জমিতে ফারুকের মাল্টা বাগান। সারিবদ্ধভাবে লাগানো গাছে ঝুলে আছে গ্রিন ব্রি-১ জাতের মাল্টা। কীটনাশক ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষায় ফুড প্যাক দিয়ে মোড়ানো ফলগুলো।
২০১৮ সালে করা ফারুকের মাল্টা বাগানে রয়েছে সবজি ক্ষেত। একদিকে ফলের বাগান অন্যদিকে সবজি ক্ষেত থেকে হচ্ছে বাড়তি আয়। সমন্বিত এ বাগান দেখতে প্রতিদিনই নানা জায়গা থেকে আসে দর্শনার্থীরা। ফারুকের স্বপ্ন কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলে ফ্রুটস কর্নার জোন করে কৃষিতে আরও সমৃদ্ধি আনা যাবে।
বাগান দেখতে আসা কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ছাত্র ইমরান খান বলেন, এখানে মাল্টা চাষ হচ্ছে এটা জানা ছিল না। লোকমুখে শুনে আবু রায়হান ফারুক ভাইয়ের বাগান দেখতে এলাম। খুব ভালো লাগলো। চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিকাজেও যে সফল হওয়া যায় ফারুক ভাই তার উজ্জ্বল প্রমাণ।
মুন্নাফ আলী নামের স্থানীয় একজন বলেন, ফারুকের মাল্টা বাগান বেশ সাড়া ফেলেছে। ওর বাগান দেখে আমিও চেষ্টা করছি কিছু করার। ধান, পাট চাষের চেয়ে মাল্টা দিয়ে ভালো আয় করা সম্ভব।
এ বিষয়ে আবু রায়হান ফারুক বলেন, আমার বাগানে ২৬ জাতের মাল্টা গাছ রয়েছে। এর মধ্যে তিন জাত নিয়ে বাণিজ্যিক চাষ শুরু করছি। মণপ্রতি মাল্টা পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। দ্বিতীয় বছরে দুই টন ও গত বছর চার টন মাল্টা বিক্রি করি। তিনি আরও বলেন, বেকাররা মাল্টা চাষ করতে পারেন। কৃষিনির্ভর কুড়িগ্রাম অঞ্চলে এখন নানা ধরনের ফলের বাগান দেখা যায়। আমার ইচ্ছে আছে চাকরি করে নয়, কৃষি কাজে স্বাবলম্বী হবো।
ফারুক বলেন, একবিঘা জমিতে মাল্টা চাষে খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদে মৌসুমে লাভ হয় লাখ টাকার বেশি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক শামসুদ্দিন মিয়া বলেন, জেলায় কৃষকরা বিক্ষিপ্তভাবে মাল্টা চাষ করেছেন। গত মৌসুমে জেলায় ৯ টনের বেশি মাল্টা চাষ হয়েছে। এ মৌসুমে মাল্টা চাষ আরও সম্প্রসারণ হচ্ছে।