ভয়ে গা ছমছম করে, হাড় হিম হয়ে আসে তবুও ভূতের ছবির প্রতি আলাদা একটা কৌতুহল মানুষের। যুগ যুগ ধরে দুনিয়াজুড়ে ভূতের ছবির জনপ্রিয়তা। মজার বিষয় হলো, শুধু বিনোদন হিসেবে নয়, ভূতের ছবি দেখার কিছু ভালো দিক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর কালচারাল স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের পরিচালক মার্গারেট জে কিংয়ের মতে, ‘ভৌতিক সিনেমাগুলো বহুকাল ধরে দর্শকদের মধ্যে এক ধরনের সাহস দিয়ে আসছে। ভৌতিক সিনেমাগুলো আমাদেরকে অনেক কিছু শেখায়। এই সিনেমাগুলো দেখে আমরা বুঝতে পারি, কোনো ধরনের অহেতুক ভয় আমাদেরকে মেরে ফেলতে পারে না। হঠাৎ কোনো কারণে আমরা ভয় পেতে শুরু করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারি, এ ভয়কে জয় করেও বেঁচে থাকা সম্ভব। শুধু তাই নয়, ভৌতিক সিনেমাগুলো দেখা শেষ হলে আমরা এক প্রকার স্বস্তি অনুভূত করি। যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। ’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাত্যহিক জীবনের উদ্বেগ, দুশ্চিন্তাগুলো আমাদের ভোগায়, ফলে কাজে ব্যাঘাত ঘটে। কিন্তু ভৌতিক সিনেমাগুলো আমাদেরকে নির্দিষ্ট কাজে ফোকাস করতে সহায়তা করে ও মনোযোগ বাড়ায়।’ ভূতের ছবি যারা পছন্দ করেন তাদের জন্য সুখবর হলো, পর্দায় আসছে নতুন ছবি। ১৯ আগস্ট বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেতে যাচ্ছে সাইকোলজিক্যাল হরর ছবি ‘অরফান: ফার্স্ট কিল’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে একই দিনে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সেও মুক্তি পাবে ছবিটি।
২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘অরফান’ ছবির প্রিকুয়েল এটি। উইলিয়াম ব্রেন্ট বেল পরিচালিত এ ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইসাবেল ফারম্যান, জুলিয়া স্টাইলস, রসিফ সাদারল্যান্ড, জেইড মাইকেলসহ আরও অনেকে। প্রথম ছবি ‘অরফান’ দর্শকদের ভালো সাড়া পাওয়ার পর ধারণা করা হয়েছিলো শিগগিরই পরবর্তী সিকুয়্যেল আসবে। কিন্তু কোনো এক রহস্যময় কারণে তা হয়নি। দীর্ঘদিন পর সেই রহস্যের জাল ভেঙ্গে বের হয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালে নতুন ছবির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এবারের ছবির মত আগের ছবিতেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন ইসাবেল ফারম্যান। কেট এবং জন কোলম্যান দম্পতি স্থানীয় এতিমখানা থেকে ৯ বছর বয়সী এস্থার নামের একটি রাশিয়ান মেয়েকে দত্তক নেয়। এরপরই এলোমেলো হতে থাকে তাদের জীবন। এস্থারের কর্মকান্ডে একটা সময় তারা বুঝতে পারে এ কোনো স্বাভাবিক মেয়ে নয়। একের পর এক ভয়ানক সব কান্ড ঘটিয়ে চলে সে। রীতিমত আগ্রাসী আচরণ করে। কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না তাকে। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে যায় তারা। চিকিৎসার চেষ্টা করেও কোন ফল হয় না।এক পর্যায়ে চিকিৎসক আবিস্কার করেন, এস্থার আসলে ৩৩ বছর বয়সী একজন মহিলা। হরমোনজনিত সমস্যার কারণে তার শারীরিক বৃদ্ধি হয়নি। ক্রমান্বয়ে সে খুব হিংস্র হয়ে ওঠে। বিভিন্ন সময়ে সাতজন মানুষকে মেরে ফেলে সে। এই এস্থারকে ঘিরেই আবর্তিত হয় ‘অরফান’-এর গল্প। এবারের ছবির কেন্দ্রেও এস্থার। কি ধরণের ভয়ংকর রূপ নিয়ে এবার সে দর্শকদের সামনে হাজির হয় সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।