বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চমৎকার সুসম্পর্ক বিদ্যমান থাকায় আসন্ন ভারত সফরে ইতিবাচক ফলাফল আসবে। তাদের মধ্যকার এই সুসম্পর্ক অনেক সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই আশাবাদী যে, কিছুটা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দু’নেতার মধ্যে অত্যন্ত সুদৃঢ়, উষ্ণ ও খুব ভাল সম্পর্ক বিদ্যমান থাকায় শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরটি সফল হবে।’ গত মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড এ্যাফেয়ার্স (আইসিডব্লিউএ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ সব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও জি-২০ মুখ্য সমন্বয়ক হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এই বক্তৃতা অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন এবং আইসিডব্লিউএ’র মহাপরিচালক অ্যাম্বাসেডর বিজয় ঠাকুর সিং স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
শহিদুল হক বলেন, অতীতে দুই নেতা এক মিনিটেই অনেক ইস্যু সমাধান করেছেন-যা দু’দেশের আমলা ও বৈদেশিক কার্যালয়গুলো সমাধান করতে পারেনি। দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিসিআর বঙ্গবন্ধু চেয়ার হক বলেন, সমন্বিত অর্থনীতি অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) এবং কুশিয়ারা নদী ইস্যু-যা দীর্ঘদিন ধরে অমিমাংসিত আছে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সীমান্ত চলাচল ও যোগাযোগের পাশাপাশি এই ইস্যুটিও আলোচনায় প্রধান্য পাবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের উচিৎ পানি বন্টনের ইস্যুটি নিয়ে আলাদাভাবে পানি সম্পদ উন্নয়নের ব্যাপারে আলাপ করা। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে তিনি বলেন, দু’দেশের মধ্যে বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিতে দু’দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত ঐতিহ্যগত ও বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে দু’দেশের জনগণের স্বার্থে আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক জোরদার হবে। ইতিহাস, সংস্কৃতি ও যোগাযোগের পাশাপাশি ত্যাগের ওপর ভিত্তি করে দু’দেশের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত। আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের বর্তমান যুগটি দু’দেশের সম্পর্কের ‘সোনালী অধ্যায়’। বিগত দশ বছরে এই সম্পর্কের অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। এ ব্যাপারে তিনি এক বছরে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের কথা তুলে ধরে বলেন, এটা দু’দেশের মধ্যকার নিবিড় সম্পর্কের প্রতিচ্ছবি। তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পর সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেন-যা দু’দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যই অত্যন্ত জরুরি।
শ্রিংলা বলেন, ভারত দেশটিতে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের পাশাপাশি বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়েছে- যা দু’দেশের মধ্যে আস্থা ও সমঝোতা বৃদ্ধির পথ সুগম করবে।