চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামে কলাগাছ দিয়ে তৈরি হচ্ছে আঁশযুক্ত সুতা। দেশি প্রযুক্তিতে দুই বন্ধু মিলে বিদ্যুৎচালিত মেশিন দিয়ে এই সুতা প্রস্তুত শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে তৈরি সুতার মজুদ শুরু করছেন তরুণ এই দুই উদ্যোক্তা। একসময় গাছের কলা কেটে নেওয়ার পর গাছটি সেই স্থানেই পচে নষ্ট হতো অথবা গাছের মালিক ওই গাছ কেটে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে দিত। এখন সেই পরিত্যক্ত গাছ দিয়ে সুতা তৈরি করছেন দুই বন্ধু সাইফুল ইসলাম ও আবু সাঈদ। তারা দেশি প্রযুক্তিতে তৈরি মেশিন দিয়ে কলাগাছের খোলস ছাড়িয়ে এ সুতা তৈরি করছেন। তারা পরামর্শ করে বগুড়া থেকে এই মেশিন কিনে এনে পাটাচোরা গ্রামে বসান। সপ্তাহখানেক ধরে কলাগাছ দিয়ে সুতা তৈরি করছেন তারা। গ্রামের মাঠসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পরিত্যক্ত কলাগাছ সংগ্রহ করে প্রতিদিন ১৫-২০ কেজি করে সুতা তৈরি করছেন। কলাগাছের দুই দিকের অংশ কেটে ফেলে খোলস বের করে মেশিনে দিলে অপর দিক থেকে বের হয়ে আসছে আঁশযুক্ত সুতা। এই সুতা রোদে শুকানো হচ্ছে। শুকানোর পর তার রং সোনালি হয়ে যাচ্ছে। সাঈদ ও সাইফুল জানান, লাভের আশায় দুই বন্ধু মিলে বগুড়া থেকে মেশিন কিনে এনে সুতা তৈরি করা শুরু করেছি। তবে বাজারদর নিয়ে শঙ্কিত তারা। সুতার নির্দিষ্ট কোনো বাজারদর নেই। ক্রেতারা যে দাম বেঁধে দিচ্ছেন, সেই দামেই সুতা বিক্রি করতে হচ্ছে। তাদের বেঁধে দেওয়া দামে সামান্য লাভ হলেও টিকে থাকা কঠিন। তারা বলেন, কলাগাছের বর্জ্যগুলো জৈব সার হিসেবে ব্যবহারের জন্য আলাদা করে রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কলাগাছের পানিও বিক্রি হবে বলে সেগুলো আলাদা করে সংরক্ষণ করছি। বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, বিদেশি ক্রেতারা এই সুতা বাংলাদেশ থেকে কিনছে; কিন্তু এর ন্যায্য দাম কত আমরা জানতে পারছি না। বাজারদর ভালো পেলে আমরা মেশিন আরো একটি নিয়ে আসব। কলাগাছ দিয়ে তৈরীকৃত সুতার বাজারদর ঠিক করা, পরিত্যক্ত বর্জ্য জৈব সার হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করা। স্বল্পসুদে এসব তরুণ উদ্যোক্তাকে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে এটি গড়ে উঠবে। সেই সঙ্গে বিদেশে সুতা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।