সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ০২:৪১ অপরাহ্ন

চুক্তি না হলেও তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার দাবি

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

এজেন্ডায় না থাকলেও প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সফরে ২০১১ সালে সিদ্ধান্তের আলোকে তিস্তা চুক্তিটির বিষয়টি ভারত সরকারকে জানিয়ে আসার দাবি জানিয়েছে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। একইসাথে চুক্তি না হলেও প্রধানমন্ত্রীকে ভারত থেকে ফিরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। তা না হলে বৃহত্তর গণ আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সংগ্রাম পরিষদের নেতারা। তিস্তা কর্তৃপক্ষ গঠন, নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, চুক্তিসইসহ ৬ দফা দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি। এ সময় ঘোষণাপত্র পাঠ করেন পরিষদের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ।
বক্তব্য রাখেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাফিয়ার রহমান, স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য গেরিল লিডার বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কানু, আব্দুর রাজ্জাক, আশিকুল রহমান, মোহাম্মদ আলীসহ সংগ্রাম পরিষদের ৫ জেলার ১২ উপজেলার নেতৃবৃন্দ। এ সময় সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সফি, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার, জাসদের জেলা সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ, বাংলার চোখের প্রতিষ্ঠাতা তানবীর হোসেন আশরাফী, সাংস্কৃতিক সংগঠক ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু প্রমুখ। মানববন্ধনে তিস্তা অববাহিকার ক্ষতিগ্রস্ত সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন।
ঘোষণাপত্রে সংগ্রাম পরিষদেও স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, সব কিছু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের জন্য আটকে থাকলেও তিস্তাপাড়ের ৫ জেলার ৪২ ইউনিয়নে ভাঙ্গন বন্যা থেমে নেই। ভাঙ্গনে প্রতিবছর অন্তত ৫০ হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হয়, হাজার হাজার হেক্টর জমি বিলীন হয়। তাই তিস্তা চুক্তি ঝুলে রাখা চলবে না। তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ আটকে রাখা যাবে না। ঢাকাসহ দক্ষিনা লে ৩ লাখ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও মাত্র সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়টি চির বৈষম্যমেরই প্রমাণ বহন করছে। এই দাবি মা না হলে একদফার আন্দোলন ছাড়া আমাদেও আর কোনো সুযোগ নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেছেন। তিস্তার এজেন্ডা না থাকার বিষয়টি উত্তরের মানুষের সাথে তামাশার শামিল। পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়টি আশা করি প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় তুলে আনবেন এবং ফিরে এসে নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কার্যক্রম শুরু করবেন।
মানববন্ধনে সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাফিয়ার রহমান জানান, তিস্তা অববাহিকার মানুষ আজ উদ্বাস্তু। দেশের একটি অংশের মানুষকে উদ্বাস্তু রেখে কখনোই উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া যাবে না। এজেন্ডায় থাকুক আর না থাকুক ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে জোর করে আলোচনায় আনতে হবে। প্রয়োজনে তিস্তা চুক্তি নিয়ে কড়া অবস্থানে যেতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। তা নাহলে আমরা বাঁচব না। উত্তরের কৃষি বাঁচবে না। কৃষক বাঁচবে না। আমরা বাঁচব না। আমাদের লাগাতার আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায়ও থাকবে না। মানববন্ধনে সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, আমরা আমরা আশা করেছিলাম। এই সফরে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। আমরা জানতে পেরেছি খরাকালে তিস্তার পানি পাওয়ার চুক্তিটি ২০১১ সাল থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ফ্যালারিজমের কথা বলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সেই দায়িত্ব পালন করছে না। তিস্তা নদীতে তাদের পানি ছাড়ার ক্ষমতা নেই। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আপনি বলেছিলেন, তিস্তা নদী খনন করবেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। আমরা সেটাই দাবি করছি। তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এই অববাহিকা বাঁচাতে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি তিস্তা চুক্তি সই করেত না পারেন, তাহলে কূটনৈতিকভাবে তৎপরতা চালাতে হবে। কিন্ত ভারত থেকে তাকে ফিরে এসে ঘোষণা দিতে হবে বন্যা খরা ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য তিস্তা মহা পরিকল্পনা তিনি বাস্তবায়ন করবেন। কারণ এখন তিস্তা নদীর ৫ হাজার কিউসেক পানি ধারণ করার ক্ষমতা নেই। ভারত গজলডোবা বাঁধ দিয়ে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি তিস্তা অববাহিকায় গণজাগরণ তৈরি হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বৃহত্তর গণ আন্দোলনে যাবে সংগ্রাম পরিষদ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com