সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

কালীগঞ্জে ইজিবাইক ও গাড়ির বেপরোয়া গতি পৌরবাসীর দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে

হুমায়ুন কবির (কালীগঞ্জ) ঝিনাইদহ :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার মধ্যে একমাত্র কালীগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে মহাসড়ক রয়েছে। মহাসড়ক ঘেষা এই উপজেলার পৌর এলাকার অনেকটা মাঝখান দিয়ে খুলনা কুস্টিয়া ও জীবননগর, মুজিবনগর এবং নারিকেলবাড়িয়া হয়ে গোপালগঞ্জ সড়ক চলে গেছে। সংগত কারণেই ছোটো বড় নানা যানবাহন চলাচল করায় এ মহাসড়ক সবসময় ব্যস্ত থাকে। এই ব্যস্ত মহাসড়ক যেনো আরও ব্যস্ত হয়ে গেছে শহরের পুরাত ব্রিজটির স্থানে নতুন ব্রিজের কাজ চলমান হওয়ার পর থেকে। বর্তমানে শহরের মধ্যে চলাচলের জন্য পৌরবাসীকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে নিমতলা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। প্রতিদিন মহাসড়কে ইঞ্জিনচালিত ছোট-বড় গাড়ির সাথে যুক্ত হচ্ছে শহরের ভেতরে চলাচলকারী ইজিবাইক, রিকশা, ভ্যানসহ ছোটো ছোটো যান। আর দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুটে চলা বড় বড় অধিক গতিসম্পন্ন গাড়িগুলো যখন পৌরএলাকার মহাসড়ক অতিক্রম করছে তখন দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে খুলনা কুষ্টিয়া রুটে গড়ায় ও রুপসা পরিবহনের বেপরোয়া গতি এই মহাসড়ক ব্যবহারকারী মানুষদেরকে আতংকগ্রস্ত করে দিলেও কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করে আসছে। মহাসড়কে পৌর এলাকা চিহ্নিত ফলক লক্ষ করা গেলেও যান চলাচলের নির্ধারিত কোনো গতিসীমা উল্লেখপূর্বক সাইনবোর্ড দেওয়া নেয়। শহরের প্রবেশমুখে কিংবা বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি মহাসড়কে নেয় কোনো গতিরোধক। ফলে বেপরোয়া গতিতে বড় বড় যান শহর অতিক্রম করারা সময় অনেক ক্ষেত্রে ছোটো বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। যেমন, গত শুক্রবার মেইন বাসস্ট্যান্ডে দ্রুতগামী পিকআপের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে চাকায় পিস্ট হয়ে দুমাসের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের পাশাপাশি মোবারকগঞ্জ সুগার মিল এলাকার মহাসড়কও দূর্ঘটনাকবলিত অধিক ঝুকিপূর্ণ এলাকা। পাশাপাশি তিন চাকার ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক যত্রতত্রভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহরের বিভিন্ন রাস্তা ও মহাসড়কে।বিশেষ করে বাসস্ট্যান্ডের চৌরাস্তার মোড়গুলোর দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, রাস্তার মোড়গুলো ইজিবাইকের দখলে। শহরের প্রবেশ পথ প্রায় আটকে দিয়ে ইজিবাইক চালকরা একজন আরেকজনের সাথে গল্পেও মাতেন। আবার চারপাশে রাস্তার উপর দাড়িয়েই ইজিবাইক চালক যাত্রীদের উঠানামা করান। দায়িত্বজ্ঞানহীন অদক্ষ এই ইজিবাইক চালকদের কারণেই অনেক সময় দূর্ঘটনা ঘটছে। তাদেরকে কোনো ভাবেই শৃঙ্খলার মধ্যে আনা সম্ভব হচ্ছে না। পৌরসভা কর্তৃক প্রতি ইজিবাইক থেকে টোল আদায় করলেও রুট অনুযায়ী যাত্রী উঠানামা ও চলাচলের উপর নেই কোনো তদারকি। একইসাথে কালীগঞ্জে নির্দিষ্ট বাসটার্মিনাল থাকা সত্বেও আন্তঃ জেলায় চলাচলকারী বাস ট্রাকগুলো তা ব্যাবহার না করে মহাসড়কের উপরে গাড়ি দাড় করে যার যার কাজ করে যাচ্ছেন। আবার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বালিহাট হওয়ায় বালিভর্তি অনেক ট্রাক রাস্তা ধারেই সারিবদ্ধভাবে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের গাড়ির যত্রতত্র পার্কিং ও হকারদের দোকানের পসরা সাজিয়ে বসাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। পৌর এলাকায় ছোটবড় যান চলাচল ও মহাসড়ক ব্যবহারে দীর্ঘদিন ধরে বিশৃংখল অবস্থা বিরাজ করলেও তা যেন দেখার কেউ নেই। আর কয়টি মায়ের কোল খালি হলে এইসব দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বোধহয় ঘটবে। এব্যাপারে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ বলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে ছোট-বড় যানচলাচল ও মহাসড়ক ব্যবহারের বিধি বিধান মাইকিং করে একাধিকবার প্রচার করলেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ভাবছি আমি নিজেই মাঠে নামব।আর আমাদের পৌর এলাকার প্রবেশ ফলকে শহরের মধ্যে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা উল্লেখ করে দ্রুত সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেব। পৌরএলাকার সাধারন জনগন নির্বিঘেœ চলাচল করবেন এবং সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরবেন এমনটিই প্রত্যাশা করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com