দৈনিক বাংলা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানের দাফন হয়েছে বনানী কবরস্থানে । গতকাল সোমবার সকালে কর্মস্থল দৈনিক বাংলার কার্যালয়ের সামনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দৈনিক বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টু জানিয়েছেন, দৈনিক বাংলা কার্যালয় থেকে তার মরদেহ নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ রাখা হয়। এরপর দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবে রাখা হয় তোয়াব খানের মরদেহ। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ক্লাব থেকে মরদেহ নেওয়া হয় গুলশানে মরহুমের নিজ বাসভবনে। বাদ আছর গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে এই সাংবাদিককে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ৮৭ বছর বয়সী সাংবাদিক তোয়াব খান। সাংবাদিক তোয়াব খানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলার রসুলপুর গ্রামে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি তৎকালীন বিভিন্ন পত্রিকায় সমকালীন ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করতেন।
তোয়াব খানের সাংবাদিকতা জীবনের শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে। ১৯৫৫ সালে সহ-সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১ সালে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন। এরপর ১৯৬৪ সালে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে।
দেশ স্বাধীনের পর দৈনিক পাকিস্তান থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন তোয়াব খান। ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন তোয়াব খান। সে সময় তার আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হয় ‘পি-ির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান। দৈনিক জনকণ্ঠের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তিনি। এরপর নতুন আঙ্গিক ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন দেশবরেণ্যে এ সাংবাদিক।