বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটাতে বিএনপি আন্দোলনে নেমে গেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ (টুকু)। তিনি বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলন করে যে প্রতিবন্ধকতা ছিল (জোটবদ্ধ আন্দোলনের যে প্রতিবন্ধকতা), তা উঠে গেছে।
এখন আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে রাজপথে নামব। আমরা বিএনপি ইতিমধ্যে আন্দোলনে নেমে গেছি। শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটানোর পক্ষে যারা আছে, তারা সবাই এক হয়েছি।’ ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন নয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিএনপির এই শীর্ষ নেতা এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম। ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘মনে হয় না যুগপৎ আন্দোলনের পথে কোনো বাধা আছে। আমরা যে যার জায়গা থেকে আন্দোলন করব। আমরা বিএনপি ইতিমধ্যে আন্দোলনে নেমে গেছি। আমরা আলোচনাও চালাচ্ছি।’
জোট করে আন্দোলন করতে গেলে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকে উল্লেখ করে ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘২০১৮ সালে সেটা আমরা দেখেছিলাম। অমুক আছে, অমুক নাই। সে জন্য তারেক রাহমান বলেছেন, যুগপৎ আন্দোলন করতে হবে। যুগপৎ আন্দোলন করে যে প্রতিবন্ধকতা ছিল, তা উঠে গেছে। এখন আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে রাজপথে নামব।’
আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিকে ‘বিএনপি-জামায়াত’ বলে হাইফেনযুক্ত করে রেখেছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বিএনপি একটি অন্য আদর্শের দল। তার সাথে ট্যাগ করার কিছু নাই। ধর্মীয় রাজনীতি যারা করে, তাদের সঙ্গে আমরা রিলেটেড (সম্পৃক্ত) নই। আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি, যুগপৎ আন্দোলন করব। যার যা শক্তি আছে, তাই নিয়েই মাঠে আসো। এখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। আমরা উন্মুক্ত করে দিয়ে যুগপৎ করতে গিয়ে জাতীয় ঐক্যের সৃষ্টি করেছি। শেখ হাসিনা সরকারকে হটানোর পক্ষে যারা আছে, তারা সবাই এক হয়েছি।’ অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন আন্দোলন পথে গড়িয়েছে। যে উচ্ছ্বাস আপনাদের মধ্যে দেখছি, তা তিন মাস আগেও দেখা যায়নি। এই সময়ের মধ্যে পাঁচজন মানুষ মারা গেছে, কিন্তু আমি মানুষের মধ্যে কোনো ভয় দেখছি না। আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল এই ভয়কে জয় করা।’
এই সরকার ইতিমধ্যে পরাজয় স্বীকার করেছে মন্তব্য করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একজন কাউন্সিলরও যদি বিরোধিতা করেন, তাহলে ক্ষমতায় থাকব না। ভোটার একজনও না চাইলে ক্ষমতায় থাকব না, সে কথা বলার সাহস নাই তাঁর। বড় বড় রাজনৈতিক দল যদি বলেও ছেড়ে দাও, তা মানার শক্তি নেই। কিন্তু ওনাকে যেতে হবে এবং সেটার সিগন্যাল তিনি দিয়েছেন।’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি শামা ওবায়েদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীন আমরা নির্বাচনে যাব না। শেখ হাসিনাকে নামাতে হবে, এটাই সবচেয়ে বড় কাজ।’ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম।