মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
পটিয়ায় থামানো যাচ্ছে না মাটি কাটা নান্দাইলে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী এড. কাজী আরমান কটিয়াদীতে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি, বোরো ধান রোপন নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা ভালুকায় জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত ধনবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিজ্ঞান ও তারুণ্য উৎসব টঙ্গীতে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন লামা অবৈধ ৪ ইট ভাটায় যৌথ অভিযান : ১১ লাখ টাকা জরিমানা পাখির কিচির-মিচিরে মুখরিত শ্রীমঙ্গলের ‘বাইক্কা বিল’ কয়রা শাকবাড়িয়া খালের উপর সেতু নির্মান কাজ শুরু আশার প্রতিফলন এলাকাবাসীর ফটিকছড়িতে শহীদ জিয়ার নামে টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি নৌকার চেয়ারম্যান! কারণ দর্শানোর নোটিশ

ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে আমাদের বের করে দিয়েছিল: মীর

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২

সঞ্চালক-কমেডিয়ান হিসেবে দুই বাংলায় দারুণ খ্যাতি রয়েছে মীর আফসার আলীর। পশ্চিমবঙ্গের জি-বাংলার জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘মীরাক্কেল’ উপস্থাপনা করে দর্শকের মনে জায়গা করে নেন তিনি। অভিনয়ের জন্যও সুখ্যাতি রয়েছে তার। কিন্তু অনেক সংগ্রাম করে আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে হয়েছে তাকে। সপরিবারে ভাড়া বাড়ি থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়েছিল। কয়েকদিন আগে সেই গল্প শুনিয়েছেন মীর আফসার আলী।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মীর আফসার আলী বলেন ‘ঘটনাটি ১৯৮৭ সালের। সেই সময়ে আমরা থাকতাম রিপন স্ট্রিটের পাশে ওয়েলসলি স্ট্রিটে। আমরা যেখানে থাকতাম সেটা বাস্তবিকই সিঁড়িতলার ঘর ছিল। মানে এক কামরার ঘরটি সিঁড়িরতলায় ছিল। আসলে যাদের ভাড়াটে হিসেবে থাকতাম তাদের এটি সার্ভেন্ট কোয়াটার ছিল। ওই ঘরে আব্বা-আম্মার ঘঙ্গে থাকতাম আমি।’
রাতারাতি ঘরহারা হওয়ার কথা জানিয়ে মীর বলেন, ‘সিঁড়িতলার ঘর হওয়ার কারণে মাথা নীচু করে ঢুকতে হতো। এ ঘর থেকে আমাদের উৎখাত করার জন্য অনেক দিন ধরে চেষ্টা চলছিল। যে প্রোমোটার অসৎ উপায়ে বাড়িটি অধিগ্রহণ করে, সে মামলায় জিতে যায়। ১৯৮৭ সালের ৩১ আগস্ট সেখান থেকে সপরিবারে আমরা উৎখাত হই। রাতারাতি আমরা ঘরহারা হয়ে যাই।’
সেদিনের স্মৃতি হাতড়ে মীর বলেন, ‘সেদিন দুপুরবেলা আমি স্কুল থেকে ফিরে দেখি, আব্বা নামাজ পড়ছেন। কিছু গুন্ডা স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সমস্ত জিনিসপত্র রাস্তায় ফেলে দেয়। খাবার, বাসন, আসবাবপত্র রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছিল। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ওই দৃশ্য কোনোদিন ভুলব না; সারাজীবন ওই দৃশ্য আমাকে ব্যথা দেবে।’
মীরের বয়স তখন ১২ বছর। ওই পরিস্থিতিতে তাদের আশ্রয় দেয় মীরের বাবার অফিসের বস। তা জানিয়ে মীর বলেন, ‘আব্বা যার অধীনে চাকরি করতেন, তিনি তার কারখানায় আমাদের আশ্রয় দেন। কারখানায় যে মিস্ত্রিরা ছিলেন তারা খুব সাপোর্টিং ছিলেন। তারা আমার মাকে আগলে রেখেছিলেন। কারণ একজন মহিলা বাচ্চা নিয়ে কারখানায় থাকছেন। সেটা খুব ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা ছিল।’
দুঃসহ স্মৃতি ঘুমাতে দেয়নি মীরকে। তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেই সময়ে আব্বা চাইছিলেন মাকে নিয়ে আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাই। কারণ সেখানে আমাদের একটা বাড়ি আছে। কিন্তু আমার পরীক্ষার কারণে যেতে পারিনি। আব্বা চাননি আমার পরীক্ষায় কোনো ক্ষতি হোক। সুতরাং কারখানায় থেকে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিয়ে পাস করি। তারপর যখন পূজার ছুটি হয় তখন গ্রামের বাড়ি চলে যাই। সেই যাওয়া ছিল গভীর ক্ষত নিয়ে। কারণ মাথার ওপর একটা ছাদ ছিল সেটাও চলে গেছে। সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। রাতে দুঃস্বপ্ন দেখতাম, আবারো কেউ আমাদের বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছে।’ ‘সিঁড়িতলার ঘর থেকে যখন বিতাড়িত হই, তখন মনে মনে একটা পণ করেছিলাম; একদিন বাবা-মাকে এমন একটি ঘর উপহার দেব যেখানে মাথা নীচু করে নয় উঁচু করে ঢুকতে হয়। আপনাদের ভালোবাসায় সেটা অনেকটা করতে পেরেছি।’ বলেন মীর।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com