বরিশাল বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার দশমিনা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সম্প্রতি জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ঘোষিত পরিপত্রে এ তথ্য জানা গেছে।জানা গেছে, উপজেলার দশমিনা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯১৪সালে প্রতিষ্ঠিত। এ বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে ভালো ফলাফল করে আসছে। সর্বশেষ সমাপনী পরীক্ষায় ১০৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে ১০ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায় এবং বাকি শিক্ষার্থীরাও এ গ্রেডে পাস করেছে। এ ছাড়া এখানে পড়াশোনার মান ভালো বিধায় অন্য উপজেলার অনেক সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ের যেখানে শিক্ষার্থী পায় না আর এখানে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে রীতিমতো ব্যাপক প্রতিযোগিতা করে ভর্তি হতে হয় বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৬৮৯জন শিক্ষার্থী আছে।ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বেশ কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই সাফল্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আছে পাঠদানে শিক্ষকদের পূর্বপ্রস্ততি, পাঠদানের সময় শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার, হাস্যরস ও খেলার ছলে পাঠদান শেষে শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন, দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে আরও আন্তরিকভাবে পাঠদান, ছুটির আগে পরে অতিরিক্ত পাঠদান, প্রতিটি অধ্যায় শেষে এবং সাপ্তাহিক-মাসিক পরীক্ষা, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিবছরের ৩০ জুনের মধ্যে পাঠদান শেষ,প্রতি মাসে মা ও বছরে দুবার অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন। পাশাপাশি আমরা শিক্ষকেরা স্কুল ছুটির আগেপরে এবংস্কুল বন্ধের দিনে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের সমস্যা ও করণীয় বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে পরামর্শ করি।এ ছাড়া সংগীত,নৃত্য,অভিনয়, বক্তৃতা, কবিতা আবৃত্তি, জারিগানসহ প্রভৃতি বিষয়ে সপ্তাহে বৃহষ্পতি বার শিক্ষার্থীদের অনুশীলন করানো হয়।এর আগে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণ করে আমাদের বিদ্যালয়টি কয়েক বার সেরা হয়েছে।’পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেরিন জানান, ‘ক্লাসে স্যারেরা যেভাবে পড়ায়, যত খোঁজ নেয়, সেটা বাবা-মাও নেয় না।স্যারেরা আমাদের বাড়িতেও যায়।’বিদ্যালয়ের প্রধান মেরী সুলতানা বুলু জানান, সুষ্ঠু পরিকল্পনা, একাগ্রতা, সদিচ্ছা,তদারকি ও পেশাদারত্ব থাকলেই যেকোনো কাজে সফলতা অর্জন করা যায়। শিক্ষক, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ও অভিভাবকদের অবদানে আমরা বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হওয়ার গৌরব অর্জন করেছি। আশা করি আমাদের স্কুল একদিন দেশসেরা হবে। এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন বলেন, আন্তরিকভাবে পাঠদান করালে শহরের স্কুলগুলোকেও যে টপকে যাওয়া যায়, তা বিভাগের মধ্যে সেরা হয়ে তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।