বাংলাদেশ মুভি ক্লাব এর উদ্যোগে গত ২৮ অক্টোবর ২০২২, শুক্রবার বিকাল ৫টায় ঢাকার বাংলামটরস্থ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বাংলা শর্টস স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাবের সদস্যসচিব মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায়, ক্লাবের আহবায়ক জাকারিয়া হাবিব পাইলটের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র সমালোচক, লেখক ও গবেষক অনুপম হায়াত। বিশেষ অতিথি ছিলেন কিডস ক্রিয়েশন টিভির সি ইও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শরীফ বায়জীদ মাহমুদ, মুভি ক্লাবের উপদেষ্টা, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, লেখক ও গবেষক মোস্তফা মনোয়ার, সিনেটিউন মিডিয়ার চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। অনুষ্ঠানে বিচারক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক আল হোসাইন পিয়ারু, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ও নাট্য গবেষক ডা. আবু হেনা আবিদ জাফর ও প্যান ভিশন টিভির সি ইও মাহবুব মুকুল।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন- চলচ্চিত্র আমাদের সমাজের কথা বলে, আমাদের দেশের কথা বলে। এই মাধ্যমটির মাধ্যমে খুব সহজেই মানুষকে বিনোদন দেওয়া যায়। মানুষও উপভোগ করে। আমাদেরকে যেন হীন ও নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ থেকে দূরে রাখে। সমাজের মানুষদেরকে মানস পরিবর্তন করে এমন চলচ্চিত্র নির্মাণ সময়ের দাবি।
অতিথিরা আরো বলেন- নতুন নির্মাতারা যারা চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করছেন তাদেরকে স্বাগতম। এই পথ বন্ধুর তবে চেষ্টা অব্যাহত রাখলে সামনের পথ শুধু এগিয়ে যাওয়ার। আপনারা অনেকেই নতুন মুখ, সবেমাত্র কাজ শুরু করেছেন। চলচ্চিত্র নির্মাণ শৈলীতে আরো দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এটা এক দিনেই সম্ভব নয়। দীর্ঘ সাধনায় এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। হতাশ হলে চলবে না। অনেকেই ভালো করেছেন। ভালোলাগার বিষয় হচ্ছে-মফস্বল শহর থেকে এই আয়োজনের সাথে অনেকেই যুক্ত হয়েছেন। সীমাবদ্ধতা থাকবে। তারপরেও মানসম্পন্ন কাজ করবার তাড়না থাকতে হবে। সেরাদের সেরা হতে হবে। চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করতে হলে প্রচুর স্টাডি করতে হবে। প্রচুর মুভি দেখতে হবে। এভাবে কাজ করতে করতে আপনারাই দেশ সেরা হবেন, বিশ^সেরা হবেন। চলচ্চিত্রের এই নতুন মুখগুলোর জন্য অফুরন্ত দোয়া। মুভি ক্লাবকে সাধুবাদ জানাই এ ধরনের একটি উদ্যোগ নেবার জন্য। এ আয়োজন তরুণদেরকে উৎসাহিত করবে। আগামী দিনে চলচ্চিত্র আন্দোলনে মুভি ক্লাব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে সে প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে বিচারকদের চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হয় আই’জ (নোয়াখালী), প্রথম রানার আপ গলদ (বগুড়া), দ্বিতীয় রানার আপ রবিবার সকাল ১০ টা (লক্ষীপুর)। টপটেনের অন্যান্য মুভি- ফিয়ার (ঢাকা), আরও একটি একুশে ফেব্রুয়ারী (ঢাকা), সার্কেল (ঢাকা), ননসেন্স (ঢাকা), আমলনামা (ঝিনাইদহ), আমিও তোমার মত হতে চাই (রংপুর), সেলফির আড়ালে (দিনাজপুর)। চ্যাম্পিয়নকে নগদ ৫০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ, প্রথম রানার আপকে ৩০,০০০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ, দ্বিতীয় রানার আপকে ২০,০০০ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। বেস্ট ডিরেক্টর আবু সাঈদ খান, বেস্ট অ্যাক্টর শেতফুল আলম গোলাপ, বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফার দিবালোক দে প্রত্যেককে নগদ ১০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। টপটেনের অন্যান্যদেরকে নগদ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২০ নভেম্বর ২০১৯ থেকে ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত ‘বাংলা শর্টস স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৯’ এ নির্মাতাগণ অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেন এবং ২০ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত তাদের নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র জমা দেন। এ প্রতিযোগিতায় শতাধিক ফিল্ম জমা হয়। জুরি বোর্ডের সম্মানিত সদস্যরা কয়েকটি ধাপে বিচারকার্য করার মাধ্যমে টপটেন বাছাই করেন। তরুণ এই নির্মাতারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন-বাংলাদেশ মুভি ক্লাবের এই আয়োজন সত্যিই অসাধারণ ও অনন্য। আমাদের মতো নবীনদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যে মুভি ক্লাব পাশে দাঁড়িয়ে যে সাহস যোগালো। নিশ্চয় আমাদের আগামীর পথ চলায় তা নতুনভাবে উজ্জীবিত করবে। আমরাও মুভি ক্লাবের এই ধরনের আয়োজনের ধারাবাহিকতা ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি। মুভি ক্লাবের সভাপতির জাকারিয়া হাবিব পাইলটের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।