দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়াহিদার চিকিৎসা চলছে। পাশাপাশি হামলায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ইউএনও ওয়াহিদার ইনজুরি ক্রিটিকাল। অনেকটা উন্নতি (ইম্প্রুভ) হয়েছে। ডাক্তাররা চেষ্টা করছেন তার কন্ডিশন আরও ভালো করতে। আজ সকালেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশনা দিয়েছেন এর জন্য যা কিছু করার, তা করতে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দুজন ধরা পড়েছে আপনারা জানেন। রাষ্ট্রব্যবস্থায় অনেক সময় অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। এগুলো আমাদের জীবনেও ঘটে। সবকিছুর ওপর তো আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কিন্তু আমাদের কাজ হলো এগুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। হত্যার উদ্দেশ্যে তারা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে এবং হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে সকালে আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অনতি হলে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব। এ হামলার ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদার ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন।
ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় শুক্রবার দিনভর অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন- ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) জাহাঙ্গীর আলম (৪২), উপজেলা যুবলীগের সদস্য (বহিষ্কৃত) আসাদুল ইসলাম (৩৫), শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা আদুর ছেলে মাসুদ রানা (৪০), নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৮), চকবামুনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার মৃত ফারাজ উদ্দিনের ছেলে রং মিস্ত্রি নবিরুল ইসলাম (৩৫) ও একই এলাকার খোকার ছেলে সান্টু চন্দ্র দাস (২৮)।