শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন

১৯৭১ নিয়ে ইমরান খানের সত্যভাষণ

সৈয়দ আবদাল আহমদ :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২

মায়ের নামে লাহোরে শওকত খানম মেমোরিয়াল ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ে তুলেছিলেন ইমরান খান। সেই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আবার লংমার্চ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বনন্দিত ক্রিকেটার। আততায়ীর গুলি তার প্রাণনাশ করতে পারেনি। বেঁচে গেছেন তিনি। শওকত খানম হাসপাতালের চিকিৎসক ফয়সাল সুলতান জানিয়েছেন, ‘এক্স-রে ও স্ক্যানের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইমরান খানের ডান পায়ের হাড়ে বুলেটের কিছু অংশ বিঁধেছিল। অস্ত্রোপচার করে সেগুলো বের করা হয়েছে। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল।’ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ফয়সাল সুলতান তার স্বাস্থ্য-বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। তার নেতৃত্বেই মেডিক্যাল টিম হয়েছে। এই টিমই ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসা অব্যাহত রাখবে। ফয়সাল সুলতান জিও নিউজ ও ডনকে জানান, ইমরান খান তিন সপ্তাহ পর্যন্ত হাঁটতে পারবেন না বললেও, ইমরান বলেছেন, রাওয়ালপি-ি থেকে তিনি লংমার্চে যোগ দেবেন। আততায়ীর তিনটি গুলি লেগেছিল তার ডান পায়ে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে লংমার্চের বহরে ঢুকে ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছিল সন্ত্রাসীরা। পাকিস্তানে আগাম নির্বাচন দাবিতে লাহোর থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশে লংমার্চ শুরু করেছিলেন ইমরান খান। ওই লংমার্চে কনটেইনার ব্যবহার করে বিশেষ গাড়ি তৈরি করা হয়েছিল। সেই গাড়িতে যাত্রা করেন ইমরান খান। আর লংমার্চ ওয়াজিরাবাদে এলে কনটেইনারের সামনে থেকে একে-৪৭ রাইফেল ব্যবহার করে গুলি চালায় সন্ত্রাসীদের একজন। তবে হামলা বানচাল করে দিয়ে হামলাকারীকে যিনি ধরে ফেলেন তিনি তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির কর্মী ইবতিশাম। ভিডিওতে সবাই যে দৃশ্যটি দেখেন, বন্দুক উঁচিয়ে গুলি চালাচ্ছে আততায়ী। সেই সময়ই একজন পেছন থেকে তাকে হাত চেপে ধরে বন্দুক কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। একপর্যায়ে অস্ত্র ফেলে দিয়ে আততায়ী দৌড়াতে থাকে। ইবতিশামও দৌড়ে তাকে ধরে ফেলেন। হামলাকারী স্বীকার করেন, তিনি ইমরান খানকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। এর কারণ হিসেবে বলেন, ‘ইমরান খান লোকজনকে বিভ্রান্ত করছিলেন। এটি আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই তাকে মারার চেষ্টা করি।’ হামলাকারীকে ধরে ফেলার জন্য ইবতিশামের সাথে হাসপাতালে দেখা করে তাকে ধন্যবাদ জানান ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘তুমি পাকিস্তানের হিরো, অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছ। আমার খুব ভালো লেগেছে।’ তিনি ইবতিশামের সেই শার্টে যেটি হামলাকারীকে ধরার সময় তার পরনে ছিল, তাতে অটোগ্রাফও দেন ইমরান খান। শওকত খানম মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসার পর ইমরান খান বলেন, ‘খোদা আমায় দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন। তার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা।’
২০১১ সালের ১০ মে পাকিস্তান সফরে গিয়ে লাহোরে ইমরানের গড়ে তোলা এই হাসপাতাল দেখে এসেছি। পাকিস্তানের গণতন্ত্র, গণমাধ্যম ও সমাজ জীবন পর্যবেক্ষণে এক সাংবাদিক প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে গিয়েছিলাম হাসপাতালটিতে। মাকে ভালোবাসার অনন্য এই নিদর্শন দেখে আমরা সেদিন অভিভূত হয়েছিলাম। ইমরান খানের মা শওকত খানম ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। ইমরান খান পণ করেন, মায়ের নামে হাসপাতাল গড়ে তুলবেন। ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা দেবেন। তাই ক্রিকেট খেলায় অর্জিত পুরো অর্থ এ হাসপাতাল নির্মাণে ব্যয় করেন। হাসপাতালের জন্য প্রচুর আন্তর্জাতিক দানও আসে বিভিন্ন দাতা ও স্বেচ্ছাসেবীর কাছ থেকে। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেও জাকাতের দান এসেছে এ হাসপাতালে। এই টাকা দিয়েই ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা চলছে অনেক বছর ধরে।
একাত্তরে বাংলাদেশের সাথে ন্যায়বিচার হয়নি:গুলির ঘটনার একদিন পর হাসপাতালের বেডে থেকেই ইমরান খান তার ওপর হামলার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ ও পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ে কর্মরত মেজর জেনারেল ফয়সাল নাসিরকে দায়ী করেন। তিনি সুস্থ হয়ে আন্দোলনে নামারও ঘোষণা দেন। হামলায় প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে ইমরান খান ৫১ বছর আগের এক তোলপাড় করা ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ করেন। সেটি হলো পাকিস্তান কেন ভেঙে গেল। আজ তার দলের সাথে জুলুম হচ্ছে জানিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘একাত্তর সালে পূর্বপাকিস্তানের সাথে কী হয়েছিল? সবচেয়ে বড় যে রাজনৈতিক দল নির্বাচনে জিতেছিল, তাদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছিল সামরিক বাহিনী। তাদের যে অধিকার ছিল, তা দেয়া হয়নি।’ ইমরান বলেন, ‘১৮ বছর বয়সে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ১৯৭১ সালে খেলতে গিয়েছিলাম পূর্বপাকিস্তানে। পূর্বপাকিস্তানের গণমাধ্যমের ওপর তখন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। আমার জানা ছিল না, সেখানকার মানুষের ভেতরে আমাদের সম্পর্কে কী পরিমাণ ঘৃণা জমেছিল। কেন ঘৃণা জমেছিল? তারা নির্বাচনে জিতেছিল আর আমরা সেই অধিকার দিচ্ছিলাম না। প্রধানমন্ত্রী তাদের হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা এখানে (পশ্চিম পাকিস্তানে) বসে সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা তাদের প্রধানমন্ত্রী হতে দেবো না।’
তিনি আরো বলেন,‘একজন চতুর ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ তৎকালীন নির্বাচনে বিজয়ী বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে (আওয়ামী লীগ) বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছিল- যার ফলে দেশ দু’-টুকরো হয়ে যায়।’ সেই সময়কার পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা ও পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী, ফাঁসিতে নিহত জুলফিকার আলী ভুট্টোর প্রতি ইঙ্গিত করেন ইমরান খান।
ইমরান খান বলেন, ‘সবাই জানে যে, মুজিবুর রহমান ও তার দল ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জিতেছিল। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিবর্তে একজন চতুর রাজনীতিবিদ বিজয়ী দল ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে সঙ্ঘাত সৃষ্টি করে দেন।’
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পাকিস্তানের পূর্ব ও পশ্চিমাংশে মোট ৩০০টি আসনে ভোটাভুটি হয়েছিল। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগ পূর্বপাকিস্তানে ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টিতে জয়ী হয়। জুলফিকার আলী ভুট্টোর পিপিপি পশ্চিম পাকিস্তানে জয়ী হয় ৮১টি আসনে। ফলে সেই নির্বাচন শুধু পূর্বপাকিস্তানেই নয়, গোটা পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে জুলফিকার আলী ভুট্টো নানা কৌশল করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় যেতে দেননি। এ ঘটনাটি বাঙালিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং এটি স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। এরপর একাত্তরে ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।
ইমরান খান ৫১ বছর আগের ইতিহাসের এই চরম সত্য ঘটনা প্রকাশ করেছেন। এর আগে এমন করে পাকিস্তানের কোনো রাজনীতিক পাকিস্তান-বাংলাদেশের ওই ঐতিহাসিক ঘটনাটি তুলে ধরেননি। অবশ্য প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ একবার ঢাকা এসে ওই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।
ভুট্টোর ষড়যন্ত্রেই ভেঙে যায় পাকিস্তান: আগেই উল্লেখ করেছি, ২০১১ সালের মে মাসে ১০ সদস্যের সাংবাদিক প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলাম। সফরের অংশ হিসেবে আমরা লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যাই। তখন পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডক্টর মুজাহিদ কামরান সাংবাদিক হিসেবে আমাদের পেয়ে খুব খুশি হন। কারণ তার বাবাও ছিলেন পাকিস্তানের স্বনামধন্য ও খ্যাতিমান সাংবাদিক। নাম সৈয়দ সাব্বির হোসাইন।
পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আমাদের সবাইকে তার বাবার লেখা ‘আইয়ুব ভুট্টো অ্যান্ড জিয়া’ বইটি উপহার দেন। এক সময় জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে সৈয়দ সাব্বির হোসাইনের খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এই বই নিয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ততার পর্যায়ে চলে যায়। সাংবাদিক সাব্বির হোসাইন পাকিস্তান টাইমসের পলিটিক্যাল করেসপনডেন্ট ছিলেন। তার রাজনৈতিক কলাম খুব জনপ্রিয় ছিল। তিনি ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় ঢাকায় ছিলেন। আবার একাত্তরের ২৫ মার্চও ঢাকায় ছিলেন। ওই সময়ের উত্তজনাপূর্ণ মুহূর্তগুলো কাছ থেকে দেখার তার সৌভাগ্য হয়েছিল সাংবাদিক হিসেবে এবং একই সাথে ভুট্টোর সান্নিধ্যে থাকার কারণে।
বইটি পেয়ে খুব খুশি হই এবং আদ্যোপান্ত পড়ে ফেলি। সেই বই থেকে দৈনিক আমার দেশে এক পাতা জুড়ে ‘ভুট্টোর ষড়যন্ত্রেই ভেঙে যায় পাকিস্তান’ শিরোনামে আমার নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল।
বইটিতে পাকিস্তানি সাংবাদিক সৈয়দ সাব্বির হোসাইন একাত্তরের শ্বাসরুদ্ধকর সেই দিনগুলোর কথা এভাবে তুলে ধরেন- ‘একাত্তরের ১২ জানুয়ারি ইয়াহিয়া খান ঢাকায় এসে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনায় বসেন। পরের দিনও বৈঠক চলে। ১৪ জানুয়ারি ইয়াহিয়া খান করাচি ফিরে যান এবং বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।’ এর দু’দিন পর ইয়াহিয়া খান লারকানায় জুলফিকার আলী ভুট্টোর বাড়িতে মেহমান হন। সেখান থেকে করাচি ফেরার পর তিনি তার লারকানা সফরকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হিসেবে বর্ণনা করেন। লারকানায় ভুট্টোর বাড়িতে ইয়াহিয়া খানের এই উপস্থিতিই ছিল পাকিস্তান ভাঙার প্রক্রিয়ার সূচনা। এভাবেই ভুট্টোর কব্জায় চলে যান ইয়াহিয়া খান। সেখান থেকে আর বের হতে পারেননি। পরবর্তীতে মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকও ব্যর্থ হয়ে যায়।
পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি তার বাবার লেখা ‘আইয়ুব ভুট্টো অ্যান্ড জিয়াউল হক : হাউ দে ফিল ভিকটিম টু দেয়ার ওউন প্ল্যান’ বইিটিও আমাকে উপহার দিয়েছিলেন। এ বইটি ২০১০ সালে লাহোর থেকে প্রকাশিত হয়। বইটির একটি অংশ সৈয়দ সাব্বির হোসাইন লিখেন, ‘একাত্তরের ২৭ জানুয়ারি জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকায় যান এবং শেখ মুজিবের সাথে দু’দফা বৈঠক করেন। এ সময় দু’জন কাশ্মিরি ভারতীয় একটি ছোট্ট ফকার বিমানকে হাইজ্যাক করে লাহোরে অবতরণে বাধ্য করে। ভুট্টো পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে ওই দুই কাশ্মিরির সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের ‘বীর’ বলে আখ্যায়িত করেন। ভুট্টো এ সময় বলেন, কাশ্মিরি এই দুই বীরকে পাকিস্তান সরকার রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই বিমানটি উড়িয়ে দেয়া হয়। ভুট্টো তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ভারতীয় বিমান হাইজ্যাক ও উড়িয়ে দেয়ার ঘটনা এটিই প্রমাণ করে, দুনিয়ার কোনো শক্তি কাশ্মিরিদের রুখে দিতে পারবেন না। পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে তখন সরদার কাইয়ুম ভুট্টোর এই বক্তব্যকে কা-জ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি তখন বলেন, মাত্র একটি ফকারের বিনিময়ে ভারতীয়রা কাশ্মিরিদের স্বাধীনতা দিয়ে দেবে- এটি ভাবা নির্বুদ্ধিতা ছাড়া কিছু নয়। এর কয়েক ঘণ্টা পরই দেখা গেল ভিন্ন দৃশ্য। ভারতীয় ভূখ-ের আকাশের ওপর যেকোনো পাকিস্তানি বিমানের উড্ডয়ন ভারত নিষিদ্ধ ঘোষণা করল। পাকিস্তানের দুই অংশ পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্বপাকিস্তান এক ধরনের বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ওই দুই কাশ্মিরি যে ভারতীয় এজেন্ট ছিল, তা প্রমাণ হতে বেশি সময় লাগেনি।’ তিনি আরো লিখেন, ভুট্টোর চতুরতার খেসারত দিতে হয়েছে আমাদের। তার ষড়যন্ত্রে পা দেন ইয়াহিয়া খান। আর তার ষড়যন্ত্রের কারণেই পাকিস্তান ভেঙে যায়। তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের ওপর যে অবিচার করা হয়েছিল এবং পশ্চিম পাকিস্তানের তৎকালীন শাসকরা যে বাড়াবাড়ি করেছিলেন সে কথা পাকিস্তানের বেশির ভাগ মানুষ উপলব্ধি করে। পাকিস্তানের মানুষের কাছে ১৯৭১ এক বেদনার অধ্যায়।’
একই কথারই পুনরাবৃত্তি এবার করলেন ইমরান খান। একটি সাধারণ নির্বাচন যে কত গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্বাচনটিকে উপেক্ষা করলে কী পরিণতি হয় সে বিষয়ই উঠে এসেছে ইমরান খান ও পাকিস্তানি সাংবাদিকের লেখায়। বাংলাদেশে পরপর দু’টি নির্বাচন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর হাইজ্যাক করা হয়েছে। এর পরিণতিই আজ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট। সামনে আরেকটি নির্বাচন আসছে। বিরোধী দল একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছে এবং এ ধরনের নির্বাচন একমাত্র নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হওয়া সম্ভব। এ ধরনের নির্বাচন হতে না দিলে তার পরিণতিও যে ক্ষমতাসীনদের জন্য সুখকর হবে না ইতিহাসের ঘটনার শিক্ষা সেটিই। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমেইল:abadal62@gmail.com




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com