প্রেমের টানে এবার ইতালি থেকে কক্সবাজারের রামুতে এসেছেন তরুণী রুবেরটা (২৩)। তিন দিন ধরে থাকছেন রামু সদরের হাইটুপি বড়ুয়াপাড়ায়। এই পাড়ার ইতালিপ্রবাসী বিকাশ বড়ুয়ার ছেলে রুনেক্স বড়ুয়ার (২৮) সঙ্গে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক তাঁর। চলতি নভেম্বর মাসের শেষ দিকে তাঁদের বিয়ে হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
বিদেশি হবু বউকে দেখতে রুনেক্স বড়ুয়ার বাড়িতে প্রতিবেশীদের ভিড় লেগে আছে। প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের আবদার রক্ষা করতে রুবেরটা ও রুনেক্সকে নতুন পোশাক পরে ছবির জন্য পোজ দিতে হচ্ছে। অনেকে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করছেন। এতে আরও অনেকে তাঁদের দেখতে আসছেন। গতকাল শনিবার সকালে রুনেক্স বড়ুয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, বাড়িতে অনেকের ভিড়। সবার নজর ইতালির রুবেরটার দিকে। স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন বড়ুয়া (৪৫) বলেন, ‘রামুতে কারও বিদেশি বউ নেই। প্রথম কোনো ঘরে বিদেশি বউ এল। গ্রামের নারীরা বিদেশি বউয়ের সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু জমছে না। ভাষা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে।’
রুনেক্স বড়ুয়া বলেন, তিন বছর আগে তিনি রামু থেকে ইতালিতে যান। সেখানকার একটি আবাসিক হোটেলে তাঁর চাকরি হয়। ওই হোটেলে আগে থেকেই চাকরি করতেন রুবেরটা। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে ভালো লাগা ও ভালোবাসার সম্পর্ক হয়। পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে তাঁরা দুজন রামুতে এসেছেন। ৯ নভেম্বর তাঁরা ইতালি থেকে ঢাকায় পৌঁছান। এরপর রামুতে বাড়িতে যান। পরিবারের সদস্যরা রুবেরটাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন বলে তিনি জানান।
রুবেরটা বলেন, রুনেক্স সুদর্শন। তিনি অন্য রকম। সে কারণে তিনি তাঁর প্রেমে পড়েন। বললেন, মানুষের জীবন একটা। জীবনের সঙ্গীও একটা হওয়া উচিত। কিন্তু তাঁর সমাজে সেটার প্রচলন নেই। তাঁর বিশ্বাস, তাঁরা দুজন একসঙ্গে বাকিটা জীবন কাটাতে পারবেন। তুরস্কের মেয়ে আয়েশা প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ছেলে হুমায়ুনকে বিয়ে করেছেন রুনেক্সের মা সুমি বড়ুয়া বলেন, বিয়ের প্রস্তুতি চলছে। বিয়ের আগে বউকে শাড়ি পরানো শেখানো, এক-আধটু কথাবার্তা, টুকটাক রান্নাবান্নাও শেখানো হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ করলেন, ‘ইচ্ছা ছিল ছেলেকে বিদেশি বিয়ে করাব। এখন সে স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। ধুমধাম করে ছেলের বিয়ে দেব।’
রুনেক্স বড়ুয়ার ছোট ভাই শাওন বড়ুয়া বলেন, রুবেরটাকে গ্রাম ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন। ভাষাগত কিছু সমস্যা থাকলেও তিনি সবকিছু মানিয়ে নিচ্ছেন। বাংলাদেশের মেয়েদের মতো পোশাক পরছেন। লোকজন বাড়িতে এলে হাসিমুখে কথা বলছেন। রুবেরটা ভাইয়ের পাশে দাঁড়ালে বোঝার উপায় নেই যে তিনি বিদেশি।