বিএনপি সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় থেকেও দেখিয়েছি। আমাদের আচরণ কিন্তু গণতান্ত্রিক। আমরা তা ভবিষ্যতেও দেখাবো।
গতকাল রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. খন্দকার মোশাররফ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, মৌলিক মানবাধিকার, সাম্য ও সকল নাগরিকের জন্য অর্থনীতিক উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে লাখো শহীদের রক্তে স্বাধীন বাংলাদেশ। গত ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও আশপাশে গণবিরোধী সরকারের নির্দেশে তার বিভিন্ন বাহিনী যে নির্মম নিষ্ঠুরতা ও বর্বর আচরণ করেছে তা শুধু বিজয়ের মাসকে কলঙ্কিত করেনি। গণতন্ত্র হত্যাকারী ও বারবার গণতন্ত্র হত্যায় সহায়তাকারী বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অগণতান্ত্রিক, কর্তৃত্ববাদী ও গণবিরোধী পরিচয় পুনরায় প্রকাশ করেছে।
তিনি আরো বলেন, দলের মহাসচিবকে অফিসের নিচে বসিয়ে রেখে এবং দলের অন্যান্য নেতাদের কয়েকটি কক্ষে আটকে রেখে অসংখ্য টিয়ারগ্যাস, গুলি, সাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করে। সাদা ব্যাগে করে নিজেরাই ককটেল নিয়ে মহাসচিবের ও জাসাস কার্যালয়ের টয়লেটে মোট ১৫টি ককটেল রেখে তা উদ্ধারের যে নাটক, মিডিয়ার কল্যাণে তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়েছে।
ড. মোশাররফ বলেন, ক্ষতি ও লুট হওয়া সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ৫০,৮২,৫০০ (পঞ্চাশ লাখ বিরাশি হাজার পাঁচ শত) টাকা। কোনো অফিস বা গৃহ তল্লাশির সময় মালিকপক্ষ এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসাবে রাখার সাধারণ আইন অগ্রাহ্য করে পুলিশ। তারা যা করেছে তা হানাদার বাহিনীর আচরণকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনায় জড়িত পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
বিএনপি’র সংগ্রামী মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাসসহ গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
২৪ ডিসেম্বর বিএনপির গণমিছিল তারিখ পরিবর্তন করে ৩০ ডিসেম্বর করাকে আপনাদের নমনীয়তা কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্ন ড. মোশারফ বলেন, এটা আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি। আমরা ইতোপূর্বে ঘোষণা করেছিলাম। ২৪ তারিখে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল হবে। সেই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাদেরকে অনুরোধ করেছেন। গণমিছিলের তারিখ পরিবর্তন করার জন্য। আমরা রাজনীতি করি। আমাদের দল মধ্যপন্থী গণতন্ত্রপন্ত্রী রাজনীতি করে। বিএনপি সংঘাতে রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। নীতির প্রেক্ষাপটে আমাদের এই তারিখ পরিবর্তন করতে হয়েছে। কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তন এটা কারো কাছে নমনীয়তা নয়। এটা আমাদের রাজনৈতিক দর্শন, রাজনৈতিক চিন্তাধারা।
তিনি আরো বলেন, ১৪ বছর ধরে নির্যাতন-জুলুম করছে। আওয়ামী লীগ কখনো বিরোধী মতকে সহ্য করতে পারে না। স্বাধীনতার পরে ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত তারা একই আচরণ করেছে। বর্তমানে তারা একই আচরণ করছে। আমরা আমাদের কোনো সমাবশে, মিছিল-কর্মসূচি বাধাহীনভাবে করতে পারি না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ প্রমুখ।