উত্তরের জেলাগুলোতে বইতে শুরু করেছে কনকনে শীত। হাড়কাঁপানো শীতে শরীরে উষ্ণতা নিতে বেড়েছে চায়ের কদর। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ততা বেড়েছে চায়ের দোকানগুলোতে।
দিনাজপুরের হিলি বাজারে বেশকিছু চায়ের দোকান রয়েছে। সবচেয়ে বেশি চা বিক্রি হয় হিলি-রেলস্টেশন রাস্তার গোডাউন মোড় এলাকায়। সেখানেই ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চা বিক্রি করেন খাদেমুল নামের এক ব্যক্তি। এতে তার মাসিক আয় ৮০-৯০ হাজার টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে খাদেমুলের চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, খাদ্যগুদামের দেওয়াল ঘেঁষে তার দোকান। চারটি বে ও একটি টেবিল নিয়ে দোকানের অবস্থান। খোলা দোকানের নেই জানালা-দরজা। খোলা দোকানের সামনে চুলা জ্বালিয়ে বিক্রি করছেন চা আর কফি।
ভ্যানচালক আমেদ আলী (৬০) বলেন, ‘বাবারে, তোরা গায়ে চাদর দিয়ে আছেন (তোমাদের গায়ে চাদর আছে) আর হামার গাওত একটি ছিঁড়া জ্যাকেট। দুদিন ধরে যে বাতাস শুরু হয়চে তাতে ঠান্ডা বরফের মতো মনে হচ্ছে। বাজার থেকে যাওয়ার পথে খাদেমুলের দোকানের এককাপ চা খেয়ে গাওটা গরম করে নিই।’
পথচারী হিমেল বলেন, ‘সকালে হিলি সবজি বাজারে কিছু কিনতে এসেছি। বাজার প্রায় শেষের দিকে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় হাত কনকন করছে। খাদেমুলের দোকানের চায়ের চুলায় হাতটা গরম করে নিচ্ছি। এক কাপ লাল চা খেয়ে শরীরটাও গরম করে নিচ্ছি।’
খাদেমুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কদিন আগে এক হাজার কাপ চা বিক্রি হলেও এখন দেড় হাজার কাপ চা বিক্রি হয়। তিনি লাল চা, দুধ চা ও কফি বিক্রি করেন। লাল ও দুধ চা প্রতি কাপ ৫ টাকা। কফি ১০ টাকা।
চা ছাড়াও খাদেমুলের দোকানে দুই রকমের লাড্ডু ও বলক্রিম পাওয়া যায়। যার দাম ৫ টাকা। এ থেকে খাদেমুলের প্রতিদিন খরচ বাদে লাভ হয় ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা। অর্থাৎ খরচ বাদে মাসে আয় ৮০-৯০ হাজার টাকা।
চা বিক্রেতা খাদেমুল বলেন, ‘ভিড়ের মাঝে অনেক মানুষ আছেন চা পান শেষে টাকা না দিয়ে পালিয়ে যান। তখন মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়। তবে মানুষের সেবা করতে খুব ভালো লাগে। দোকানে দুজন কর্মচারী আছে। তাদের প্রতিদিনের মজুরি দিয়ে যা থাকে তাই দিয়ে ভাই-বোন, বাবা-মাকে নিয়ে অনেক ভালো আছি।’