বাবা দিন মজুর, মা গৃহিনী। তাদের সংসারে পাঁচ মেয়ের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ পিংকি রাণী। নাটোর সদর থানার আগদিঘা খাঁ পাড়ায় তাদের বাড়ি। আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে সবার সহযোগিতায় নাটোর নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা সরকারী কলেজে ভর্তি হয় সে। সেখান থেকে সে এবার এইচ এসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। দিনমজুর বাবার সংসারে কোনমতে দিন গুজরান তাদের। এক বেলা খেয়ে আর এক বেলা না খেয়ে দিন কাটে তাদের। বড় তিন বোনের বিয়ে হয়েছে আগেই। চতুর্থ মেয়ে শিলা এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে এখন নাটোর নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা সরকারী কলেজে ই্ংরেজী ১ম বর্ষে লেখাপড়া করছে। বৃত্তি পাওয়ায় তার লেখাপড়া কোনমতে চালিয়ে নিচ্ছে সে। মাঝে মাঝে সংসারেও আর্থিক সহযোগিতা করতে হয় তাকে। ছোট বোনের লেখাপড়ায় কোন আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব নয় তার পক্ষে। শিলা ও পিংকি মোমিনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলামের কাছে বিনা বেতনে প্রাইভেট পড়ে ও বই-পুস্তকের সহায়তা পেয়ে এতদুর এসেছে। বই পুস্তক দিয়ে সহযোগিতা করেছে তাদের সহপাঠিরাও। কিন্তু অনেক অর্থের প্রয়োজন উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে। সেকথা ভেবে পিংকি দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত। তবে কি তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে ? তার ইচ্ছা কি পূরণ হবে না? পিংকির বাবা আনন্দ প্রামানিক জানান, তার বয়স হয়েছে। ঠিকমত মজুরীও খাটতে পারেননা। একদিন মজুর খাটেন তো পরদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার স্ত্রী শান্তি রাণী গৃহহিনী। মেয়েদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে তিনি কিছুই করতে পারেন না। তার মেয়ে জামাইদেরও অবস্থা তেমন নয়। তার দুই মেয়ে নিজেদের চেষ্টায় ও শিক্ষকসহ অনেকের সহযোগিতায় এতদুর এসেছে। তাদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের ইচ্ছা। লেখাপড়ার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা না পেলে তাদের লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। সমাজের বিত্তবান ও প্রশাসনের কাছে তার আকুল আবেদন তারা আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে দরিদ্র বাবা-মায়ের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ করে দেবেন। পিংকি রাণী জানায়, তার ইচ্ছা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে সে ভবিষ্যতে শিক্ষক হবে। কিন্তু মাঝ পথে এসে অর্থের অভাবে তার সে আশা বোধয় আর পুরণ হবে না। আর্থিক সহযোগিতা না পেলে হয়তো তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সমাজের বিত্তবান ও প্রশাসনের কাছে তার আকুল আবেদন তারা তার লেখাপড়া চালিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা দেবেন। পিংকি রাণীর প্রইভেট শিক্ষক মোমিনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম জানান, পিংকি একজন মেধাবী ছাত্রী। তাদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয় জন্য তিনি তাকে প্রাইভেট পড়ানোসহ সম্ভাব্য সহযোগিতা দিয়েছেন। কিন্তু এখন আর্থিক সহযোগিতা না পেলে হয়তো তার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে তার উচ্চ শিক্ষার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। পিংকির লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক সহযোগিতা সহ সকল সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রশাসন ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি ।