ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ায় দেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা চলছে। এরই জেরে মঙ্গলবার কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকায়। অথচ গত সপ্তাহে এসব বাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সরবরাহ ঠিক থাকার পরও বাড়তি মুনাফার জন্য দাম বাড়িয়েছে একটি চক্র। এখনই বাজার পর্যবেক্ষণ জোরদার না করা গেলে পেঁয়াজের দাম আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। মুরাদনগর বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ইমন খান ও শাহআলম বলেন, কোম্পানীগঞ্জ বাজার থেকে পেঁয়াজ এনে নিজ দোকানে বিক্রি করি। পেঁয়াজের আড়তদাররা সিন্ডিকেট করার কারণে সোমবারে পেঁয়াজ কিনেছি ৬৫ টাকা দরে। এখন বিক্রি কত করতে হবে সেটাতো আপনারা বোঝেন। অপর ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম বলেন, চান্দিনা বাজারের আড়ত থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ ক্রয় করেছি। বিক্রি করছি ৮০ টাকা দরে। অনেক আড়তে পেঁয়াজের মুজত রয়েছে, তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। নোয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা দুলাল আহমদ বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আমার ঘরে সোমবার থেকে পেঁয়াজ নাই। বাজারে যেন আগুন লেগেছে। এভাবে কতদিন থাকবে জানি না। আমরা যারা গরীব তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। নিমাইকান্দি গ্রামের বজলুর রহমান বলেন, আমি ২ কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে ক্রয় করেছি। বাঙ্গরা বাজার ব্যবসায়ী বাবলু আলী খান বলেন, বাজারে প্রচুর পরিমান পেয়াজ মজুত থাকা সত্বেও একটি কুচক্রি মহল লাগামহীনভাবে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। আমি সকালে ৬৫ টাকা কেজি দরে পেয়াজ ক্রয় করেছি। বিকেলে শুনেছি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোম্পানীগঞ্জ বাজারের পেঁয়াজের আড়তদার জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার জন্য খুচরা বিক্রেতারা দায়ী। তিনি আরো বলেন, খোলাবাজারে খুচরা বিক্রেতারা ৭০-৮০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। আমরা যারা আড়তদার আছি আমাদের কাছে কোন খুচরা কাস্টমার নেই। খোলাবাজারে খুচরা বিক্রেতাদের কন্ট্রোল করতে পারলে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জমির আলী নামে আরেক আড়তদার বলেন, ভারতের বাজারে দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশের দাম বেড়েছে। আজ মঙ্গলবার পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ৪০-৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক দাশ বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বিভিন্ন বাজারে মনিটরিং চলছে। স্থিতিশীল না হলে বুধবার থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।