ভোলার লালমোহন উপজেলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে এই উপজেলার কৃষকরা কিছুটা বিপাকে পড়লেও যথাসময়ে তা কাটিয়ে উঠে আশানূরূপ ফলন পেয়েছেন তারা। বাজারেও উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি কৃষকরা। লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর লালমোহন উপজেলায় ২৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। যেখান থেকে এ মৌসুমে হেক্টর প্রতি গড়ে সাড়ে ৩ টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে এ বছর এই উপজেলায় অন্তত ৮২ হাজার ৭৫ টন ধান উৎপাদন হবে বলে ধারণা করছে কৃষি অফিস। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারছেন কৃষকরা। সে হিসেবে চলতি আমন মৌসুমে লালমোহন উপজেলায় সর্বমোট ২১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৬৮ হাজার ৭৫০ টাকার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই উপজেলার সব ধান কর্তন সম্পন্ন হবে বলে মনে করছে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের আসুলি এলাকার আমন ধান চাষি মো. ফিরোজ জানান, বেশ কয়েক বছর ধরেই আমরা বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ করছি। এ বছর ৪৮০ শতাংশ জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। তবে মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে ধানের চারা রোপণ করতে হয়েছে কয়েকবার। তবুও এবার জমিতে খুব ভালো ধান হয়েছে। বাজারে বর্তমানে ধানের দামও ভালো। তাই এবার ধান চাষ করে কাক্সিক্ষত ফলন পেয়েছি। ওই এলাকার মো. সবুজ নামে আরেক আমন ধান চাষি বলেন, এ বছর ৩২০ শতাংশ জমিতে আমনের আবাদ করেছি। মৌসুমের শুরুতে অন্যান্য চাষিদের মতো আমাদেরও ধানের চারা রোপণ করতে হয়েছে কয়েকবার। কারণ মৌসুমের শুরুর দিকে ব্যাপক বৃষ্টিতে ধান ক্ষেত পানিতে ডুবে গিয়েছিল। তবে সব বিপত্তি কাটিয়ে এরইমধ্যে ক্ষেতের সব ধান কাটা শেষ করেছি। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হলেও ধান সংগ্রহ করা পর্যন্ত আবহাওয়া অনেক ভালো ছিল। যার জন্য আল্লাহর রহমতে ধানের ফলনও ভালো পেয়েছি। এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আহসান উল্লাহ জানান, আমন আবাদের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে চাষিদের সত্যিই অনেক ব্যাঘ পেতে হয়েছে। তবে কৃষি অফিসের পরামর্শে চাষিরা তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন। এরপর চাষিদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে এ বছর তারা আমন ধানের ভালো ফলন পেতে সক্ষম হয়েছেন। বাজারেও বর্তমানে এসব ধানের ভালো দাম রয়েছে। তাই আমরা আশা করছি আগামীতে এই উপজেলায় আমন আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।