বেশ কয়েক বছর ধরেই বাজারে ড্রাগন ফল দেখা যায়। দেশের কয়েকটি জেলায় বিদেশি এই ফল চাষও বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। এই ফলকে পিথায়া বা স্ট্রবেরি পিয়ারও বলে। তবে আমাদের দেশে এটি ড্রাগন ফল হিসেবেই পরিচিতি পাচ্ছে। নতুন জাতের এই ফলটির আছে অনেক পুষ্টিগুণ। তাই কেন ড্রাগন ফল খাবেন, তা জানি চলুন-
পুষ্টি উপাদান অনেক: এই ফলটিতে আছে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল। এক কাপ পরিমাণ ড্রাগন ফলে (২২৭ গ্রাম) ১৩৬ ক্যালরি থাকে, প্রোটিন থাকে ৩ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট থাকে ২৯ গ্রাম ও আঁশ থাকে ৭ গ্রাম। এসব পুষ্টি উপাদান ছাড়াও ড্রাগন ফলে শরীরের জন্য উপকারি উপাদান পলিফেনল, ক্যারোটিনয়েড ও বেটাসিয়ানিন থাকে।
জটিল রোগ সারাতে ভূমিকা রাখে: শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল বড় ধরনের রোগ সৃষ্টি করে। সে জন্য অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল উপকারি ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও আথ্রাইটিসের মতো জটিল রোগ সারাতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করার চেয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে গ্রহণ করা উত্তম।
প্রচুর আঁশ সমৃদ্ধ : স্বাস্থ্য বিশারদরা বলেন, প্রতিদিন একজন নারীকে ২৫ গ্রাম ও পুরুষকে ৩৮ গ্রাম আঁশ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা জরুরি। সে হিসেবে প্রতিদিনের চাহিদার একটা বড় অংশ পূরণ করতে পারে ড্রাগন ফল। এই আঁশ হজমের জন্য যেমন উপকারি তেমনি কোনো কোনো গবেষক বলছেন তা হৃদরোগ ও কোলন ক্যানসারের মতো রোগও প্রতিরোধ করতে পারে।
পাকস্থলী সুস্থ রাখে: আমাদের পাকস্থলীতে প্রায় ১০০ ট্রিলিয়ন নানা ধরনের মাইক্রো অর্গানিজম থাকে। অনেক গবেষক বলছেন, পাকস্থলীতে এসব মাইক্রো অর্গানিজমের ভারসাম্য নষ্ট হলে অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো অসুখ তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে ড্রাগন ফলে থাকা প্রিবায়োটিকস আমাদের পাকস্থলীর উপকারি ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন সি ও ক্যারোটিনয়েড মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, শ্বেত রক্ত কনিকা নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে ইনফেকশন ঠেকায়।
আয়রনের ঘাটতি মেটায়: ড্রাগন ফল এমন এক ধরনের ফল যাতে আয়রন আছে। তাই এই ফল শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ ঠিক রাখে। একটি ফলে প্রতিদিনের চাহিদার ৮ শতাংশ আয়রন পাবেন আপনি।
ম্যাগনেসিয়াম আছে অনেক: অন্য অনেক ফলের তুলনায় ড্রাগন ফলে ম্যাগনেসিয়াম আছে অনেক। প্রতিদিনের চাহিদার ১৮ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম পাবেন একটি ড্রাগন ফল থেকে। ম্যাগনেসিয়াম খাবারকে শক্তিতে রূপান্তর করতে, মাংসপেশি, হাড় এমনকি ডিএনএ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
কীভাবে খাবেন: মূলত পাকা ড্রাগন ফলই খাওয়া উচিত। পাকলে ফলটি উজ্জ্বল লাল রংয়ের হয়, অনেকটা নরম হয়। এসময় ফলটি খাবেন যে ভাবে- ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে অর্ধেক করুন ফলটিকে। এরপর চামচ দিয়ে ফলটির ভেতরের নরম অংশ বের করে আনুন। অথবা লম্বালম্বিভাবে কিউবের মতো কাটুন ফলটি। এরপর চামচ বা আঙুল দিয়ে বের করুন ফলের ভেতরের অংশ। ফলটি এমনিতেই খেতে পারেন বা সালাদ, স্মুদি বা ইয়োগার্টের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।