নাটোরের সিংড়ায় সরকারী বিএডিসি খালে মৎস্য সম্প্রসারণ প্রকল্পের পুকুর খনন করার অভিযোগ উঠেছে। মৎস্য অফিসের যোগসাজশে কৃষকদের গলার কাটায় পরিনত হয়েছে প্রকল্পটি। খালের নকশা না মেনে পুকুর খনন কিভাবে করা হলো সে প্রশ্ন গ্রামবাসীর। ঐ সময় গ্রামের কৃষকরা প্রতিবাদ করলেও কর্ণপাত করেনি মৎস্য বিভাগ। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে রাজশাহী বিভাগের মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২ টি প্রকল্প দাখিল করে ২টি পুকুর খনন করা হয় এবং ঐ সময় প্রকল্পের মাটি বিক্রির মহোৎসব করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। এ নিয়ে ইন্দ্রাসন গ্রামের কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। খাল অবমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। এদিকে বিগত আওয়ামী লীগের নেতাদের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছিলেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন। তাদের কথামতো প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও করতেন তিনি। শাহাদাত হোসেন ১ লা ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে সিংড়া উপজেলায় যোগদান করেন। তারপর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ঐ পদে বহাল রয়েছেন। রাজস্ব খাতের আওতায় পোনা মাছ অবমুক্ত করণ সহ নানা প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আর প্রকৃত জেলেরা ছিলো বঞ্চিত। বিএডিসি প্রকল্পের আওতায় ১৫৫ কিলোমিটার খাল খনন করা হয় অধিকাংশ খাল দখল করে মাছ শিকার করতেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। এতে করে খাল দখল কেন্দ্র করে মারপিটের ঘটনা ও ঘটেছে। জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও ইটালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ইন্দ্রাসন গ্রামে মাহবুব আলমের নেতৃত্বে ২০২২ সালে ঐ প্রকল্প দাখিল করা হয়। অথচ ৮১১ দাগে হিজলী ভায়া সাতপুকুরিয়া থেকে ইন্দ্রাসন খাল রয়েছে। যেটা নকশায় লিপিবদ্ধ ও রয়েছে। ৮১১ দাগ বাদেও পুকুর খনন করা হয়েছে ৮১০ দাগে। যে দাগটি কয়েকজন কৃষকের নামে খাজনা খারিজ করা। কিন্তু জোরজবরদস্তির মাধ্যমে পুকুর খনন করা হয়েছে। স্থানীয় ও অফিস সুত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিভাগের মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২১/২২ অর্থ বছরে পুকুর খনন করা হয়। প্রকল্পের কোনো সাইনবোর্ড নাই। সুবিধাভোগীর তালিকা ও নাই। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর আলম, সাইফুল, বজলুর রহমান, সবুজ, মনির ও নাহিদের নেতৃত্বে ঐ প্রকল্পের পুকুর খনন করা হয়। খলিলুর রহমান, রহিদুল ইসলাম, মুকুল, গোলাম ফকির, মেরাজ সরকার, সোহাগ প্রামানিক, নিশান, আনোয়ার ফকিরের ২ একর জায়গা দখল করে পুকুর খনন করা হয়েছে। স্থানীয় কৃষক খলিলুর রহমান, রিয়াজ ও মেরাজ বলেন, অপরিকল্পিত খান খনন এবং পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কতিপয় নেতাদের খুশি করার জন্য গ্রামের মানুষের কথায় কর্ণপাত করা হয়নি। গ্রামবাসীর কোনো প্রতিবাদ তারা শোনেনি। অথচ এসব জমিতে কৃষকেরা বীজ তলা করতো, ধানের খোলা হিসেবে ও ব্যবহার হতো। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর আলম বলেন, মৎস্য বিভাগ থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। আমরা সহযোগিতা করেছি। বর্তমানে প্রকল্পের সাথে তার সম্পৃক্ততা নাই বলে জানান। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, সরেজমিনে গিয়ে প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা জানতে হবে। কৃষকদের সাথে কথা বলে সুষ্ঠু সুরাহা কিভাবে করা যায় তা ভেবে দেখবো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম বলেন, পানির প্রবাহ রোধ করে থাকলে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। জলাশয় ও সরকারী খাল দখলমুক্ত অভিযান চলমান রয়েছে।