কক্সবাজারের চকরিয়ার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘুনিয়া এলাকার পাহাড়ের পাশের তামাক ক্ষেত থেকে মৃত হাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারী সকাল সাতটার দিকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। বিগত এক মাস ৬ দিন আগে গত ৬ জানুয়ারী সন্তান সম্ভাবা মা হাতির মৃত্যু এবং একই সাথে বৈদ্যুদিক ফাঁদ সৃষ্টিকারী কৃষকের মৃত্যুর রেশ না কাটতেই আবারো বৈদ্যুতিক ফাঁদে আটকে ২য় বন্য হাতির মৃত্যুতে পরিবেশ প্রতিবেশ বিপন্নের বিষয়টি সামনে আসলো। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, তামাক ক্ষেতে হাতির উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ বসালে ফাঁদে আটকে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। তবে বিষয়টি ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত করে বলা যাবে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগ। সরেজমিন দেখা যায়, চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর ঘুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে একটি মৃত হাতি ঘিরে রাখে একদল উৎসুক জনতা। ঘটনাস্থলে মৃত হাতির পাশে জনতাকে যেতে নিষেধ করছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, চকরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তামাক ক্ষেত রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণ থেকে তামাক গাছ রক্ষা করতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতেন কৃষকেরা। এ ধরনের ফাঁদে পড়ে সুস্থ-সবল হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গত জানুয়ারিতে ফাঁসিয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান ও বন বিভাগর রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দিন বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতি হত্যার বিরুদ্ধে কয়েকটি সচেতনতামূলক সভাও করেন। মেহরাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ঘুনিয়া এলাকার কয়েকটি তামাক ক্ষেত থেকে বৈদ্যুতিক ফাঁদ অপসারণও করেছিলেন। একই এলাকায় হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। হাতিটির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে খবর দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দিন বলেন, বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে বলা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ বলা যাবে। তিনি আরও বলেন, মৃত পুরুষ হাতিটির বয়স ৪০ থেকে ৪২ বছর। তার শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো অসুস্থতা চোখে পড়েনি। উল্লেখ্য, ঘটনাস্থলের আধা কিলোমিটারের মধ্যে গত ৬ জানুয়ারী ২৫ বান্দরবানের লামার সীমান্তবর্তী ফাঁসিয়াখালীর কুমারীর চাককাটা ঝিরি এলাকায় দিনগত রাতে বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে মারা গেছে সন্তান সম্ভাবা মা হাতি। একই সময়ে দলছুট হাতির আক্রমণে নিহত হয় ধান ক্ষেতে পাহারায় থাকা হাতি হত্যাকারী ফরিদুল আলম নামের কৃষক। মৃত হাতিটির বয়স ৩০ বছর হবে বলে ধারণা করছিল লামা বন বিভাগের কর্মকর্তারা। নিহত কৃষক নাম ফরিদুল আলম(৪০)। তিনি চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের উত্তর ঘুনিয়া পাহাড়তলী এলাকার মৃত আলী আহমদের পুত্র। লামা বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা এ. কে. এম আতা এলাহী জানান, বৈদ্যুতিক ফাঁদেই হাতিটির মৃত্যু হয়।