সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। তিনি বলেছেন, ডামি নির্বাচনে জনগণ, এমনকি আওয়ামী লীগের লোকজনও ভোট দেয়নি। সরকারের একতরফা ও পাঁতানো নির্বাচন জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সংসদ অবৈধ। নামমাত্র সংসদ ভেঙে দিতে হবে। জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বর্তমান সংসদ ও বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে গত শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামিতা শুধু ইসলামেই নয়, অন্যান্য ধর্মেও বৈধ নয়। খ্রিস্ট ধর্মে বলা হয়েছে, সমকামীরা ঈশ্বরের গজবপ্রাপ্ত। হিন্দুধর্মে বলা হয়েছে, সমকামী মহিলা হলে আঙুল কেটে বা মাথা ন্যাড়া করে দিতে হবে; সমকামী পুরুষ হলে পানিতে ডুবিয়ে মারতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধানে সমকামীদের ১০ বছর কারাদ-ের বিধান, এমনকি মৃত্যুদ-ের বিধানও আছে। ইসলামে সমকামিতা হারাম। কেননা, কোনো পশুও সমলিঙ্গের কোনো পশুর সাথে কাম-বাসনায় লিপ্ত হয় না। কাজেই ট্রান্সজেন্ডারকে প্রমোট করার কোনো সুযোগ নেই।
ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন—দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, আলহাজ আলতাফ হোসেন, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতি মানসুর আহমদ সাকী, কে এম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, ফজলুল হক মৃধা, মুফতি নিজামুদ্দিন, মাওলানা আলআমিন সোহাগ, মুফতি হাফিজুল হক ফাইয়াজ, আব্দুর রহমান, এম জসিম খাঁ, কে এম নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, এ পার্লামেন্ট এক ব্যক্তির পার্লামেন্ট। এ পার্লামেন্ট শেখ হাসিনার পার্লামেন্ট। এক ব্যক্তি যা চায়, তাই করতে হবে এবং তাই করছে। বিদেশি প্রভুদের মনোরঞ্জনের জন্য তারা দেশের বিরুদ্ধে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে ও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, এ সরকারকে দ্রুত ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হবে। ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করার চেষ্টা করা হলে জনগণ তা রুখে দিবে। আমরা সমকামিতাকে প্রতিষ্ঠা করতে দেবো না। ভারতের একটি কোচিং সেন্টারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, সরকারি দলের কোনো মন্ত্রীর লজ্জা নেই। লজ্জা, লজ্জা, লজ্জা। এ লজ্জা সরকারের, মন্ত্রীদের না হলেও দেশের জনগণের লজ্জা অনুভূত হয়। জাতি হিসেবে আমরা আজ চরমভাবে লজ্জিত। একটি ভুয়া ও ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদও ডামি। এই সরকারের সকল মন্ত্রী-এমপিও ডামি হিসেবে পরিচিত। এই শিক্ষা কারিকুলাম ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করুন। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংস হওয়ার কোনো সিলেবাস এ দেশে চলতে দেওয়া হবে না। পরে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।