বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
তীব্র গরমে কালীগঞ্জে বেঁকে গেছে রেললাইন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী দিদার পাশা জনপ্রিয়তায় এগিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার উদ্যোগে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণে কর্মশালা রায়পুরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা ঘোষণা আলী আহমেদের কমলগঞ্জের মিরতিংগা চা বাগানে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত পলাশবাড়ীতে প্রচন্ড গরমে ঢোল ভাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে তরমুজ বিতরণ জুড়ীতে টিলাবাড়ি ক্রয় করে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আনারসের পাতার আঁশ থেকে সিল্ক কাপড় তৈরির শিল্পকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে-সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি রাউজানে পথচারীদের মাঝে যুবলীগের ফলমূল ও ছাতা বিতরণ

লাল গালিচা, ডুবুরি আর একলা সন্ন্যাসী

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শ্যামশরণ নেগিকে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে - ছবি - বিবিসি

ভারতে আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থেকে ১ জুন পর্যন্ত মোট সাতটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ১৮তম সংসদীয় নির্বাচন। দেশটির নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯৬ কোটি, তারাই বেছে নেবেন ৫৪৩টি লোকসভা আসন থেকে কারা পার্লামেন্টে যাবেন। ভারতের নির্বাচন কমিশন বলছে, এই ৯৬ কোটি ভোটারের প্রত্যেকের ভোটই অত্যন্ত মূল্যবান আর তারা দেশের যে প্রান্তে, যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন- ভোটের বাক্সে তারা যাতে নিজেদের মতামত খুব সহজে ও মসৃণভাবে দিতে পারেন, তার জন্য চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখা হবে না।
ভারতে নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসও বলে, অতীতে তারা মাত্র একজন ভোটারের জন্য কিংবা দেশের প্রত্যন্ত কোনো প্রান্তে হাতেগানা কয়েকজন ভোটারের কাছে পৌঁছানোর জন্য যে পরিমাণ মেহনত করেছে বা ঝুঁকি নিয়েছে তা প্রায় চোখ কপালে তুলে দেয়ার মতো। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এমনই তিনটি বিশেষ ঘটনার, যেখানে দেশের নির্বাচন কমিশন কয়েকজন বিশেষ ভোটারের কাছে পৌঁছতে নজিরবিহীন নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
যাকে ভারতের সবচেয়ে পুরনো ভোটার বলে মনে করা হত, বয়সজনিত কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর কমিশন এক সময় তার বাড়ি গিয়েও মিছিল করে তাকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে এসেছে, যাতে তাকে দেখে বাকিরাও ভোট দিতে অনুপ্রাণিত হন। ভারতে দুর্গমতম এলাকায় এমন কিছু গ্রামও রয়েছে, যেখানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য কমিশনকে পেশাদার ডুবুরি নিয়ে যেতে হয়! হাতির পিঠে চেপে, অথবা খচ্চরের ওপর মালপত্র চাপিয়ে বুথে যাওয়ার নজিরও বিরল নয়। আবার গভীর জঙ্গলের ভেতরে মাত্র একজন ভোটারের জন্য আলাদা ভোটকেন্দ্র তৈরি করারও দৃষ্টান্ত এই ভারতেই আছে। সেই সব বিচিত্র ঘটনারই বিবরণ থাকছে এই প্রতিবেদনে।
শ্যামশরণ নেগিকে ছাড়া এই প্রথম ভোট: স্বাধীনতার পর এই প্রথম ভারতে কোনো সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে যাতে শ্যামশরণ নেগি ভোট দেবেন না! যারা এই নামটির সাথে পরিচিত নন, তাদের জানানো যেতে পারে শ্যামশরণ নেগি-কে ‘ভারতের প্রথম ভোটার’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। তিনি ছিলেন পার্বত্য রাজ্য হিমাচল প্রদেশের দুর্গম কল্পা অ লের বাসিন্দা। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ১০৫ বছর বয়সে শ্যামশরণ নেগির মৃত্যু হয়। শতবর্ষী এই অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষকের মৃত্যুর পর প্রকাশ্য জনসভায় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কল্পাতে তার গ্রামে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শ্যামশরণ নেগির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল। এই বিরল সম্মানে তাকে শেষ বিদায় জানানো হয়েছিল। কারণ শ্যামশরণ নেগি সম্ভবত ভারতের একমাত্র নাগরিক, যিনি এ যাবত দেশে হওয়া সবগুলো সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন।

১৯৫২ সালের এপ্রিলে দেশে প্রথম লোকসভা গঠনের প্রায় পাঁচ মাস আগে ভোটগ্রহণ হয়েছিল হিমাচলের কল্পায়। কারণ গোটা শীতকালটাই হিমালয়ের ওই অ লটা ঢেকে থাকে পুরু বরফের চাদরে। তখনই জীবনে প্রথমবার স্বাধীন ভারতের সংসদীয় নির্বাচনে ভোট দেন শ্যামশরণ নেগি। তিনি তখন সদ্য ৩০ পেরোনো একজন যুবক।
সেইবারেরটা নিয়ে মোট ১৭বার ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন নেগি। একবারের জন্যও সেই সুযোগ মিস করেননি আর শেষবার লোকসভার জন্য তিনি ভোট দিয়েছেন ২০১৯ সালের গ্রীষ্মে। সেইবার নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা তার বাড়িতে এসে রীতিমতো মিছিল করে নেগিকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন পোলিং বুথে। পথে রীতিমতো কাঁসর-বাদ্য বাজিয়ে ও হিমাচলের সাবেকি রীতিতে তাকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। মৃত্যুর মাত্র তিন দিন আগেও তিনি একটি নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন, সেটা ছিল ২০২২ সালে হিমাচল প্রদেশের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। সেবার অবশ্য তিনি খুব অসুস্থ ছিলেন বলে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেন। নির্বাচন কমিশন তার বাড়ির সামনে রীতিমতো রেড কার্পেট বিছিয়ে সসম্মানে সেই ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে আনে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের নির্বাচন কমিশন শ্যামশরণ নেগিকে তাদের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। সে বছরের সাধারণ নির্বাচনে দেশের তরুণরা যাতে বেশি বেশি সংখ্যায় ভোট দিতে এগিয়ে আসেন, তার জন্য কমিশনের হয়ে তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন নেগি। একই আহ্বান জানিয়ে কমিশনের বানানো একটি গুগল ভিডিওতেও মূল তারকা ছিলেন তিনি, যা বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। মারা যাওয়ার তিন দিন আগে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েও তিনি ভারতের তরুণদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তাও জারি করেন।
‘দ্য ট্রিবিউন’ খবরের কাগজ জানাচ্ছে, ‘ওই বার্তায় শ্যামশরণ নেগি বলেন দেশের তরুণদের এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে নিজে থেকেই এগিয়ে আসা দরকার!’ ‘আর তার কারণটাও খুব সহজ, ভোট দেয়াটা শুধু আমাদের অধিকার নয়, এটা আমাদের কর্তব্যও বটে!’ সুদীর্ঘ আট দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজের সেই ‘গণতান্ত্রিক দায়িত্ব’ নিরলসভাবে পালন করে শ্যামশরণ নেগি বিদায় নিয়েছেন এবং এই প্রথম ভারতে কোনো সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে যাতে তিনি থাকছেন না।
ডুবুরি নিয়ে পোলিং বুথে! ভারতের উত্তর-পূর্বা লীয় রাজ্য মেঘালয়ের ওয়েস্ট জৈন্তিয়া হিলস জেলার এক প্রান্তে, ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত ঘেঁষে রয়েছে কামসিং নামে একটি গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে সারিগোয়াইন নদী, যার মাঝ বরাবর টানা হয়েছে সীমান্তরেখা। নদীর ঠিক অন্য পারে, কামসিং-এর উল্টোদিকে বাংলাদেশের সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলা। দুর্গম ও পাহাড়ি গ্রামটিতে আজ পর্যন্ত বিদ্যুতের খাম্বা বসেনি। সৌর বিদ্যুতের কয়েকটি প্যানেলই গ্রামবাসীদের ভরসা। গ্রামে বাস করে মাত্র ২০-২৫টি পরিবার। পাহাড়ের কোলে পানের চাষ করেই তাদের রুটি-রুজি চলে। বলা হচ্ছে, অখ্যাত কামসিং গ্রামের কথা। কারণ ভোটের সময় ভারতের সবচেয়ে প্রত্যন্ত বা দুর্গমতম প্রান্তে নির্বাচন কমিশনকে যে পোলিং বুথগুলো স্থাপন করতে হয় তার অন্যতম হলো এই কামসিং। কামসিং গ্রামে মোটরগাড়িতে চেপে পৌঁছনোর কোনো উপায় নেই। কারণ সেখানে কোনো রাস্তাই নেই। জেলা সদর জোওয়াই থেকে গ্রামটি ৬৯ কিলোমিটার দূরে, আর সবচেয়ে কাছাকাছি মহকুমা বা তহসিলদার অফিস যে আমলারেমে, সেটাও কামসিং থেকে কমপক্ষে ৪৪ কিলোমিটার দূরে।
কামসিং-এ পৌঁছনোর একমাত্র রাস্তা হলো সারিগোয়াইন নদী বেয়ে ছোট, সরু দেশি নৌকায় ঘন্টাখানেক ধরে চলা। ফলে প্রতিবার ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনকে নৌকাতে করেই ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ও ইভিএম-সহ ভোটের সব সরঞ্জাম কামসিং গ্রামের পোলিং বুথে পাঠাতে হয়। নির্বাচন কমিশনের একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘কামসিং-এ যাওয়ার সময় নৌকাতে আমাদের পোলিং অফিসারদের সবাইকে লাইফ জ্যাকেট পরতে হয়।’ ‘নদীপথে নৌকা ডুবে গিয়ে কারো জীবন সংশয় হলে বা ভোটের সরঞ্জাম পানিতে পড়ে গেলে যাতে তা উদ্ধার করা যায়, সে জন্য কয়েকজন ডুবুরিও এই যাত্রায় তাদের সাথে থাকেন।’
ভারতের কোনো প্রান্তে একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র স্থাপন করার জন্য অভিজ্ঞ ও পেশাদার ডুবুরিদেরও সাথে যেতে হচ্ছে- এমন দৃষ্টান্ত সারাদেশে আর একটিও নেই! গত নির্বাচনে দুর্গম কামসিং গ্রামে ছিলেন মাত্র ৩৫ জন ভোটার। এর মধ্যে ২০ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী। এরা সবাই পানের বরজে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
কিন্তু দেশের গণতন্ত্রে তাদের ভূমিকা যে অন্য কোনো নাগরিকের চেয়ে এতটুকু কম নয়, সে জন্যই এত কষ্ট করে ওই গ্রামে নিজস্ব পোলিং বুথ তৈরি করা হয় বলে জানাচ্ছেন কমিশনের কর্মকর্তারা। তারা আরো বলছেন, হিমাচল প্রদেশের লাহুল-স্পিটি অ লে রয়েছে তাশিগাং নামে একটি প্রত্যন্ত গ্রাম – সেখানেও তারা প্রতিবার আলাদা পোলিং বুথ বসিয়ে থাকেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫,২৫৬ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত তাশিগাং গ্রামের এই বুথটিকেই ‘সারাবিশ্বের মধ্যে উচ্চতম পোলিং স্টেশন’ বলে দাবি করছেন তারা। গত ১৬ মার্চ ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার যখন দেশের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছিলেন, তখন তিনি জানান দেশের কোনো অংশ যতই দুর্গম হোক না কেন- কমিশন যে কোনোভাবে সেখানে ভোটারদের কাছে পৌঁছে যাবে। ‘দরকারে ঘোড়ায় চড়ে, হেলিকপ্টারে চেপে, ব্রিজ পেরিয়েও আমরা যাব। যদি কোথাও পৌঁছতে হলে হাতির পিঠে চাপতে হয়, খচ্চরের ওপর বসে যেতে হয় তাতেও আমাদের কোনো সমস্যা নেই’, সে দিন বলেছিলেন তিনি।
জঙ্গলে একলা সন্ন্যাসীর পোলিং বুথ: ভারতের গুজরাটে ‘গির ফরেস্ট’ হলো সারা পৃথিবীতেই এশিয়াটিক লায়ন প্রজাতির শেষ টিঁকে থাকা আবাসভূমি। সিংহের এই অভয়ারণ্যে, গির-এর গভীর জঙ্গলের ভেতরে সেই ২০০৭ সাল থেকে নির্বাচন কমিশন প্রতিবার ভোট এলেই একটি বিশেষ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি করে আসছে, এবারও যার ব্যতিক্রম হবে না। জঙ্গলের ভেতরে ‘বানেজ’ নামে একটি জায়গার কাছে ওই পোলিং বুথটিতে মাত্র একজনই নথিভুক্ত ভোটার- তার নাম মহন্ত হরিদাসজী উদাসীন। আসলে ওই জঙ্গলের ভেতরে রয়েছে হিন্দুদের একটি প্রাচীন শিবমন্দির। মহন্তজি ওই মন্দিরের পুরোহিত এবং উদাসীন আখড়ার একজন সন্ন্যাসী। মন্দির প্রাঙ্গণে হরিদাস উদাসীন একাই থাকেন। ওই জঙ্গলের ত্রিসীমানায় আর কোনো জনবসতি নেই। ফলে অনেকটা অ ল জুড়ে তিনিই হলেন একমাত্র ভোটার। এই বিচিত্র কাহিনী দেশের নির্বাচন কমিশন শুনিয়েছে ‘লিপ অব ফেইথ’ নামে তাদের সদ্যপ্রকাশিত একটি পুস্তিকায়। তারা সেখানে জানিয়েছে, ‘মহন্ত হরিদাস উদাসীন হলেন আসলে মহন্ত ভরতদাস দর্শনদাসের উত্তরসূরী, যিনি আগে ওই শিবমন্দিরের প্রধান পূজারী ছিলেন।’ ‘প্রায় দীর্ঘ দুই দশক ধরে মহন্ত ভরতদাসজি ছিলেন ওই পোলিং বুথের একমাত্র ভোটার।’ ‘২০১৯ সালের নভেম্বরে তিনি প্রয়াত হলে এখন মহন্ত হরিদাসজী তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন এবং এই মুহুর্তে তিনিই ওই বুথের একমাত্র ভোটার।’
গুজরাটের এ বিশেষ বুথটি ছাড়াও সুদূর চীন সীমান্তে অরুণাচল প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম মালোগামেও রয়েছে আর একটি পোলিং স্টেশন, যেখানে নথিভুক্ত ভোটারের সংখ্যা মাত্র একজন।

২০১৯ সালে মালোগামের সেই একাকী ভোটারের কাছে পৌঁছতে নির্বাচন কমিশনের কর্মীদের টানা চার দিন ধরে দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা আর খরস্রোতা নদী উপত্যকা পাড়ি দিতে হয়েছিল। ভারতের নির্বাচন কমিশন বলছে, এত ঝামেলাঝক্কি সামলেও তারা মাত্র একজন ভোটারের জন্য এই আয়োজন করতে প্রস্তুত। কারণ তাদের নীতি হলো ‘এভরি ভোট কাউন্টস’ অর্থাৎ প্রতিটি ভোটেরই মূল্য রয়েছে। কথাটা একেবারে ফেলে দেয়ার মতোও নয়। কারণ ভারতে নানা রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয়ের নিষ্পত্তি হয়েছে, সাম্প্রতিক অতীতেও তার একাধিক উদাহরণ আছে। এমন কী, দেশের লোকসভা আসনগুলোতে, যেখানে গড় ভোটারের সংখ্যা বেশ কয়েক লাখ করে – সেখানেও জয়ের ব্যবধান দুই অঙ্কে যায়নি (মানে দশেরও কম ছিল), এরকমও কমপক্ষে দু’টি দৃষ্টান্ত আছে।
১৯৮৯ সালে অন্ধ্রের অনকাপল্লি আসনে কংগ্রেসের কোনাথালা রামকৃষ্ণ আর ১৯৯৮ সালে বিহারের রাজমহল আসনে বিজেপির সোম মারান্ডি- এরা দ ‘জনেই জিতেছিলেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে মাত্র নয়টি করে ভোট বেশি পেয়ে। এরকম অদ্ভুত সব ঘটনা, অভিনব নানা পদক্ষেপ আর চোখ কপালে তোলা পরিসংখ্যানই যে ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে এত বর্ণময় ও বৈচিত্রপূর্ণ করে তুলেছে তাতে কোনো সন্দেহই নেই। সূত্র : বিবিসি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com