নাটোরের সিংড়ায় বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে মাল্টা। উপজেলার জামতলী এলাকায় ৯ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চাষি আতিকুল রহমান ও আবু সাইদ। সমতল ভূমিতে এ ফল চাষে সফল হওয়ায় এলাকায় তারা মাল্টা চাষি আতিকুর ও সাইদ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। জানা গেছে, আতিক পেশায় বাহাদুরপুর কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক ও তার ভাই আবু সাইদ পেশায় বেকার ছিলেন। এক সময় বাড়তি আয়ের আশায় ওমরপুর শতিশচদ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের হাইস্কুল শাখার শিক্ষক হিসাবে যোগদান করে তিনি সেখানে বেতন ভাতা না হওয়ায় মুখ ফিরিয়ে নেয় পেশা থেকে। শিক্ষক থাকা অবস্থায় ইউটিউবে দেখে তার মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহ জন্মে। জামতলী এলাকায় নিজেদের ৯ বিঘা জমিতে মিশরীয় জাতের মাল্টা চাষ করেন। তার বাগানে বর্তমানে ৮০০ টি মাল্টা গাছ রয়েছে। চারা রোপণের আড়াই বছর পর ফল ধরতে শুরু করলেও তিন বছর পর প্রতিটি গাছে পূর্ণাঙ্গরূপে ফল ধরা শুরু করে। প্রতিটি গাছ থেকে ৮০ থেকে ৯০টি মাল্টা পান তিনি। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাগানে সারিবদ্ধ মাল্টার গাছ। বাগানে ৮-১০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তারা সারাবছরই এ বাগানে কাজ করেন। এছাড়া মাঝে মধ্যে ১২ থেকে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করে। মাল্টা চাষ করে আতিকুর ও আবু সাইদ এখন সফল ও স্বাবলম্বী হয়েছেন। এই মৌসুমে মাল্টা বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। খরচ বাদে তার লাভ হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। রাজধানী, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও গাজীপুর, নীলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে মাল্টা নিয়ে যায়। আবু সাইদ বলেন, মানুষকে ফরমালিন মুক্ত নিরাপদ ফল খাওয়ানোর কথা চিন্তা করেই আমাদের নিজস্ব জমিতে মাল্টার বাগান করেছি আমরা দুই ভাই। মাল্টা চাষে কৃষি বিভাগের পরামর্শসহ নানাভাবে সহযোগিতা পেয়েছি। অল্প পরিশ্রমে কম খরচে মাল্টা চাষ করে লাভবান হওয়া যায়, কেউ চাইলেই উদ্যোগ নিয়ে সফল হতে পারবে। সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ বলেন, মাল্টা চাষ করে আতিকুল ও আবু সাইদ সফল হয়েছেন। তার দেখাদেখি সিংড়া এলাকায় মাল্টা চাষের প্রবণতা বাড়ছে দিন দিন।