ফেলানী খাতুনকে ভারত সীমান্তে গুলি করে হত্যার বিচার আজও অধরা। গত মঙ্গলবার ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পূর্ণ হয়। এদিন ভারতের সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ফেলানী হত্যার মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই শুনানি ফের পিছিয়ে দেয়া হয়।
এই ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে মামলার অন্যতম আবেদনকারী বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সাধারণ সম্পাদক কিরীটি রায় এক বিবৃতিতে বলেন, দীর্ঘ ৫ বছরের বেশি সময় মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত শুনানির জন্য প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও তা আদালতে উঠছে না। অথচ সমস্ত বিবাদী পক্ষ অনেক আগেই তাদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা দিয়েছেন। মাসুম বিচার ব্যবস্থার উপর আর কতদিন আস্থা রাখা যাবে ন্যায় বিচারের জন্য সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। ২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি কোচবিহার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া টপকে সীমান্ত পারের সময় ফেলানীকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। দীর্ঘক্ষণ কাঁটাতারের বেড়ার উপরে দেহটি ঝুলেছিল। সেই ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর প্রবল আলোড়ন তৈরি হয়। জনমতের চাপে বিএসএফ দু’বার আদালত গঠন করে বিচার করলেও হত্যাকারী জওয়ানকে নির্দোষ বলে রায় দেয়।
অথচ ২০১৩ সালে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এই হত্যার ঘটনার রায়ে জানিয়েছিল যে, একজন নিরস্ত্র কিশোরী মেয়েকে বিএসএফ খুন করেছে, যা মানা যায় না। সেইসঙ্গে কমিশন ফেলানীর পরিবারকে ৫ লক্ষ রুপি ক্ষতিপূরণ দেবার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশও ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মানা হয়নি। এরপর ফেলানীর পিতা নূর হোসেনের সঙ্গে ভারতের মাসুম সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচারের দাবিতে রিট আবেদন করেন। ফেলানীর পিতা ভারতে এসে সাক্ষ্যও দেন। কিন্তু মামলাটি চূড়ান্ত শুনানির জন্য তৈরি থাকলেও বারে বারে শুনানি পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে।