নওগাঁর বদলগাছীতে অপরিকল্পিত এবং অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপনের ফলে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মেঃ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন কম হচ্ছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বদলগাছী উপজেলায় ৩৪টি ইটভাটা রয়েছে। এইসব ইটভাটার কোনটিই আইন মেনে পরিকল্পিত ভাবে নির্মাণ করা হয় নাই। সরকারি বিধি মোতাবেক অনাবাদী পতিত জমি অথবা এক ফসলী জমির শ্রেনী পরিবর্তন করে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে, জেলা প্রশাসন থেকে লাইসেন্স এবং অনুমতিপত্র নিয়ে ভাটা স্থাপন করা যাবে। কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য এই উপজেলায় স্থাপিত কোন ইটভাটারই লাইসেন্স, অনুমতিপত্র কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই ইটভাটার মালিকগণ পরিবেশ ও জনজীবনের ক্ষতিসাধন করেই নিজ স্বার্থ হাসিল করে যাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৩৪ টি ইটভাটায় প্রায় ২৫০ হেক্টর কৃষি আবাদী জমি ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে প্রায় ১২০০ মেঃটন ধান, ৬৫০০ মেঃ টন আলু, ৩০০ মেঃ টন সরিষা, ৮৫০ মেঃ টন গম উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকগন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলেন, জমির টপসয়েল কাটার কারনে ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ জমি নষ্ট হচ্ছে। এতে জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে, লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে, ফসলের ক্ষতি ও ঘাটতি হচ্ছে। কালো ধোঁয়ার কারনে আমসহ বিভিন্ন ফলজ বৃক্ষের মুকুল বাঁধা গ্রস্থ হচ্ছে।
সালফার ডাই অক্সাইডের কারনে সবজি ফসলের ফলন বাঁধা গ্রস্থ হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানা বলেন, ভাটার কালো ধোঁয়ার কারনে মানুষের শ্বাসকষ্ট সহ ফুসফুসের প্রদাহ হয়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় বলেন, অনেক জায়গায় ভাটায় মাটি সরবরাহের জন্য পুকুর অতিরিক্ত গভীর করা হয়। এতে মাছের উৎপাদন কমে যায়। এছাড়া নদীর পলি মাটি কাটার কারনেও মাছের উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। সচেতন এলাকাবাসী অপরিকল্পিত ও অবৈধ এসব ইটভাটা বন্ধ করে পরিকল্পিত ভাবে পরিবেশ বান্ধব ইটভাটা স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।