ইরান ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনকে চিত্রায়িত করে একটি কার্টুন ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনী শুরু হয়েছে তেহরানে। সোমবার রাজধানীর প্যালেস্টাইন মিউজিয়াম অব কন্টেম্পোরারি আর্ট এ প্রদর্শনীটি উম্মুক্ত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক কুদস দিবস ও ইরানের খোররামশাহর মুক্ত দিবস উদযাপন করতে ‘ম্যানিফেস্টেশন অব রেজিস্টেন্স’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে রেভ্যুলুশন অ্যান্ড স্যাকরেড ডিফেন্স ভিজুয়াল আর্টস অ্যাসোসিয়েশন।
প্রদর্শনীতে কুদস দিবসের ওপর ৩২টি কার্টুন ও খোররামশাহর মুক্ত দিবসের ওপর ২৯টি চিত্রকর্ম দেখানো হচ্ছে। সোমবার অ্যাসোসিয়শেন এই তথ্য জানিয়েছে। এটি সবার জন্য উম্মুক্ত। তবে জনসাধারণ ও দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রদর্শনীতে অংশ নিতে হবে।
প্রদর্শনী চলবে ২৮ মে পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর রমজানের শেষ শুক্রবার বিশ্ব কুদস দিবস হিসেবে পালিত হয়। এদিনের মিছিলে ফিলিস্তিনি জাতির প্রতি বিশ্বব্যাপী সমর্থন জানানো হয় এবং ফিলিস্তিনে ইসরাইলি জবর-দখলের বিরোধিতা করা হয়। ১৯৭৯ সালে এই দিবস চালু করেন ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনী (র.)। এবছর ২২ মে দিবসটি পালিত হবে।
অন্যদিকে, ২৪ মে ইরানের খোররামশাহর মুক্ত দিবস উদযাপন করা হয়। ১৯৮০ সালের ২৬ অক্টোবর ইরাকি বাহিনী দখল করার পর শহরটি ১৯৮২ সালের এদিন মুক্ত হয়। সূত্র: তেহরান টাইমস।
দখল ও অপরাধ যতদিন চলবে ততদিন কুদস দিবসও পালিত হবে
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি বলেছেন, যতদিন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ইসরাইলের দখলে থাকবে এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপরাধ অব্যাহত থাকবে ততদিন বিশ্ব কুদস দিবসও পালিত হবে। নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্ব ও অপরাধ যতদিন বিদ্যমান থাকবে বিশ্ব কুদস দিবস ততদিন পর্যন্ত পালন করা হবে।’
এসময় ইরাক ও আফগানিস্তানে নতুন অগ্রগতিকে স্বাগত জানান ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
উল্লেখ্য, কয়েক মাসের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে অবশেষে ইরাকের রাজনৈতিক দলগুলো একজন নতুন প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে সম্মত হয়েছে এবং পার্লামেন্টে তার প্রস্তাব করা অধিকাংশ মন্ত্রীর পক্ষে ভোট পড়েছে। অন্যদিকে রোববার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ও আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ একটি ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। সূত্র: তেহরান টাইমস।
কুদস দিবসে সোলাইমানির ওপর জার্নাল প্রকাশিত হবে
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) এলিট ফোর্সের প্রধান শহীদ লে. জেনারেল কাশেম সোলাইমানির ওপর একটি বিশেষ জার্নাল প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে ইরান। আসন্ন বিশ্ব কুদস দিবসে তেহরানে জার্নালটি প্রকাশ করা হবে।
প্রতিবছর রমজানের শেষ শুক্রবার বিশ্ব কুদস দিবস হিসেবে পালিত হয়। এদিনের মিছিলে ফিলিস্তিনি জাতির প্রতি বিশ্বব্যাপী সমর্থন জানানো হয় এবং ফিলিস্তিনে ইসরাইলি জবর-দখলের বিরোধিতা করা হয়। ১৯৭৯ সালে এই দিবস চালু করেন ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনী (র.)। এবছর ২২ মে দিবসটি পালিত হবে।
‘দ্যা স্কুল অব হাজি কাশেম’ শিরোনামের এক-সংস্করণের জার্নালটি শুরু করা হয়েছে আইআরজিসি কুদস ফোর্স প্রধানের জীবনী দিয়ে। জেনারেল সোলাইমানি গত জানুয়ারিতে বাগদাদে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত হন।
ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেয়ীর একটি মন্তব্য থেকে জার্নালটির নামকরণ করা হয়েছে। তিনি এক মন্তব্যে সোলাইমানির মতাদর্শকে ‘একটি স্কুল’ হিসেবে অভিহিত করেন।
এছাড়া সোলাইমানি সম্পর্কে খামেনেয়ীর করা একগুচ্ছ মন্তব্য জার্নালটিতে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সোলাইমানি ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের সময় একজন বিপ্লবী এবং ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় একজন কমান্ডার হিসেবে যে অবদান রেখেছেন তার ওপর বিশ্লেষণধর্মী একগুচ্ছ নিবন্ধও জায়গা পেয়েছে। একইসাথে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে ভূমিকা রেখেছেন তাও তুলে ধরা হয়েছে। সূত্র: তেহরান টাইমস।
কুদস দিবস: ইরানি পার্লামেন্টে ইসরাইল-বিরোধী প্রস্তাব অনুমোদন
বিশ্ব কুদস দিবসকে সামনে রেখে ইরানের পার্লামেন্টে ইসরাইল-বিরোধী একটি প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এতে তেল আবিবের নৃশংসতার বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাবটি পাশ হয়। প্রস্তাব মতে, ইসরাইলের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির ইরানে অনুষ্ঠেয় কোনো আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী, কনফারেন্স, কংগ্রেস ও সেমিনারে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করতে হবে। ইরানে ইসরাইলের তৈরি কোনো হার্ডওয়্যার ও ইসরাইল সংশ্লিষ্ট কোনো সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, এসব প্ল্যাটফর্মে কোনো ইরানি কোম্পানিকেও সেবা দেয়ার অনুমতি দেয়া যাবে না। আর এসব বিধিনিষেধ লঙ্ঘল করলে কারাদণ্ড ও অন্যান্য শাস্তি ভোগ করার বিধান রাখতে হবে।
ইসরাইলকে কোনো গোয়েন্দা সহায়তা দেয়া অথবা তেল আবিবের পক্ষে কোনো গুপ্তচরবৃত্তিকে ‘করাপশন অন দ্যা আর্থ’ হিসেবে গণ্য হবে এবং এরজন্য মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠিন শাস্তি দিতে হবে। সুরক্ষা, সামরিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মিডিয়া এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইসরাইলকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উদ্দেশ্যমূলক সহায়তা করা নিষিদ্ধের প্রস্তাব করা হয় মোশনটিতে। সূত্র: ইরান ফ্রন্ট পেজ নিউজ।
এমআর/প্রিন্স