নওগাঁর রাণীনগরে সমবায় ভিত্তিক বারোমাসি মাল্টা ও লেবু চাষ করে সফলতার দৃষ্টান্তর স্থাপন করেছে সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট। বর্তমানে সুফলা নওগাঁ প্রজেক্টের বাগানগুলোতে ভিয়েতনামের বারোমাসি মাল্টা চাষ সফলতার এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এছাড়াও বীজবিহীন বারোমাসি চায়না-৩ জাতের লেবুর চাষ আরো এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে উপজেলার কৃষকদের মাঝে। সূত্রে জানা গেছে উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নে চকাদিন এলাকায় স্থানীয় কিছু বেকার যুবকদের নিয়ে প্রজেক্টের পরিচালক হাবিব রতন ২০১৯সালে ২একর জমি লিজ নিয়ে সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্টটি শুরু করেন। এরপর থেকে আর পিছু ফিরে দেখতে হয়নি। সুফলা নওগাঁর দেখাদেখি নতুন করে সৃজন হচ্ছে মাল্টা ও লেবুর বাগান। উপজেলার প্রায় ১০০একর জমিতে লেবু চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। যার ফলে উপজেলার প্রায় ২৫০জন কৃষকদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এই প্রজেক্ট অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রজেক্টের পরিচালক হাবিব রতন বলেন মাল্টা বলতে আমরা সাধারণত হলুদ কমলা রঙের বিদেশি ফলকে বুঝে থাকি। ভিয়েতনামী বারোমাসি মাল্টা আকারে বেশ বড়। রস এবং মিষ্টতার পরিমাণও বেশি। এই মাল্টা বছরে অন্তত দুইবার পাওয়া যায়।
আগস্ট-সেপ্টেম্বর এবং ফেব্রুয়াারি-মার্চ মাস জুড়ে এই মাল্টা বাজারে বিক্রির উপযোগী হয়ে থাকে। সুফলা প্রজেক্ট এই মাল্টা চাষ সসম্প্রসারণের লক্ষ্যে ব্যাপক চারাও উৎপাদন করছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কৃষি উদ্যোক্তারা এসে চারা সংগ্রহ করছেন ফলে নতুন নতুন বাগান সৃজন হচ্ছে। বর্তমানে প্রজেক্টের ২একর জমিতে আদর্শ মিশ্র ফল বাগানে বারি-১ ও ভিয়েতনামী বারোমাসি মাল্টা, বারোমাসি কাটিমন আম ও বারি-১১ জাতের আম, বারোমাসি চায়না-৩ জাতের লেবু, ড্রাগন ফল ও কমলা চাষ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমরা বাগান থেকে ফল সংগ্রহও শুরু করেছি। এই প্রজেক্টে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে আশেপাশের প্রায় দুই শতাধিক মানুষের। বর্তমানে কাশিমপুর ইউনিয়নটি মাল্টা ও লেবু চাষের এলাকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। শুধু রাণীনগর উপজেলাই নয় আশেপাশের কয়েকটি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে সুফলা নওগাঁর সফলতার কথা যার কারণে প্রতিদিনই সম্প্রসারিত হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ফল বাগানগুলো। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, সুফলা’র গঠনমূলক সম্মিলিত কৃষি উদ্যোগের সফলতায় বিভিন্ন শ্রেণীর কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আগ্রহী কৃষকদের বাগান সৃজনে আমরা আধুনিক কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা আশা করছি এক সময় এই অঞ্চল উচ্চ মূল্যের ফল বাগানে সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে। সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট-এর এমন দৃষ্টান্ত আমাদের আধুনিক কৃষিকে নতুন এক উচ্চতায় বিকশিত করবে।