শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ অপরাহ্ন

হাওরের ধান দ্রুত কেটে ঘরে তোলার তাগিদ দিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান

আল-হেলাল সুনামগঞ্জ :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২

ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জের সকল হাওরের ধান দ্রুত কেটে ঘরে তোলার তাগিদ দিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। তিনি বলেছেন,হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে দুর্নীতি আছে,গাফিলতি আছে,এটাকে অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। আগামী বছর আমরা আবারও ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করবো, তবে এটাকে স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। শনিবার (৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১ টায় সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরস্থ জয়কলস ফসল রক্ষা বাঁধ পরিদর্শনকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জের কিছু কিছু এলাকা অকাল বন্যায় তলিয়ে গেছে। আবার কিছু এলাকা রক্ষা পেয়েছে। হাওর, আগাম বন্যা,বাঁধ এই তিনটি বিষয়ে আমার সরাসরি অভিজ্ঞতা রয়েছে। কারণ আমি হাওর এলাকার সন্তান,সেখানেই বড় হয়েছি। বন্যা কোন বছর আসে,কোন বছর আসে না, এটা প্রকৃতির ব্যাপার। এবছর পানি এসেছিল কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে ফসলহানী থেকে রক্ষা পেয়েছে। মন্ত্রী বলেন, কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিস্কার করেছেন। অল্প সময়ের মধ্যে ধান কেটে মাড়াই সহ কৃষক ঘরে ধান তুলতে পারছেন। আগামী ৭ দিন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই দ্রুত হাওরের ধান কেটে ঘরে তুলতে হবে বলে কৃষকদের পরামর্শ দেন তিনি। পরিদর্শন কালে পরিকল্পনা মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আনোয়ার উজ জামান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সামছুদ্দোহা, পরিকল্পনা মন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব মোঃ হাসনাত হোসেন,উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জসিম উদ্দিন শরিফী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুর হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রাণী তালুকদার, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ছদরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ সহ প্রমুখ। মন্ত্রী বলেন,বন্যা কোনো বছর আসে,কোনো বছর আসে না। এটা প্রাকৃতিক ব্যাপার। এটা কোনো মানুষের নিয়ন্ত্রণে নয়। তবে প্রতিবছর আমরা ফসল রক্ষা বাঁধের জন্য প্রকল্প হাতে নিই। কোনো বছর পানি আসে, কোনো বছর পানি আসে না। এম এ মান্নান বলেন, ২০১৭ সালের কথা আমার পরিষ্কার মনে আছে। তিন দিনের মধ্যে সারা সুনামগঞ্জের হাওরগুলোর ধান ডুবে মালদ্বীপ হয়ে গিয়েছিল। এ বছরও পানি এসেছিল কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এই পানি দিরাই, ধর্মপাশা, তাহিরপুর উপজেলায় ধানের কিছু ক্ষতি করছে। আগামী এক সপ্তাহ যদি প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না আসে তাহলে সুনামগঞ্জের মানুষ পুরোদমে ধান কাটতে পারবে বলে আশা করি। তিনি বলেন, হাওর এলাকায় বোরো ধান ঝুঁকির মধ্য দিয়ে করতে হবে। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে যদি ফসলের সময়সীমা কমানো যায় এবং আরও আটদিন আগে ধানটা পাকানোর জন্য বৈজ্ঞানিকভাবে কিছু বের করা যায় তাহলে হাওর অঞ্চলের জন্য কিছুটা ফায়দা হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে দুর্নীতি আছে,গাফিলতি আছে,অস্বীকার করছি না। বাঁধের কাজে প্রশাসনিকভাবে, প্রকৌশলগতভাবে গাফিলতি এবং পিআইসিদের দুর্নীতি এটা খুব পরিচিত বিষয়। তবে প্রশাসনের লোকদের আরও কঠোরভাবে কাজ করতে হবে। আমি মনে করি, এখন দোষারোপ না করে সবাই আমরা কৃষকদের পাশে দাঁড়াই। উল্লেখ্য এবার বোরো ফসল রক্ষায় সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ৫ শত ৩০ কিলোমিটার বাধ সংস্কারের লক্ষ্যে ৭২৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি পিআইসির আওতায় ১২২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বরাদ্দ নির্ধারন করে সরকার। এর মধ্যে ৬৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা পিআইসিদের অনুকূলে বিল হিসেবে পরিশোধ করে দিয়েছে পিআইসি বাস্তবায়ন কমিটি। সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ৫২টি হাওরে এ বছর ২ লাখ ২২ হাজার ৬ শত ৯৫ হেক্টর জমি চাষাবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে ফসলকাটা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com