সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ইসলাম ও জাতীয় স্বার্থে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ছাত্রজনতার দখলে রাজপথ, শ্রীমঙ্গলে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ কবিরহাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধে সন্ত্রাসী হামলা, আহত ৩ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসে আবারো হামলার শিকার টাকা না দেওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যা, ছেলে গ্রেফতার কেশবপুরের টিটাবাজিতপুরে জমি জবরদখলকারী ও চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অসুস্থ মাহমুদুর রহমান মান্না বিএসএমএমইউতে ভর্তি “বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করলে রুখে দেয়ার আহ্বান” নাজিরপুরে উপজেলা প্রকৌশলীর দুর্ণীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি নিয়ে কাজ করতে হবে: আবদুল হালিম জলঢাকায় ভোট চোর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় ২০ লাখ টন আলু

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১

দেশে এ মৌসুমে আলু উৎপাদন বেড়েছে। গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টন। অন্যদিকে বিধিনিষেধ, চাহিদা কমে যাওয়াসহ নানা কারণে হিমাগারে মজুদ রয়েছে প্রায় ৫৫ লাখ টন আলু। বাজারদর নি¤œমুখী থাকায় হিমাগার থেকে এসব আলু খালাস হচ্ছে না। এ অবস্থায় চলতি বছর শেষে ২০ লাখ টন আলু নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ)।
আলুর এ সংকট নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে বিসিএসএ। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০২০ মৌসুমে প্রায় ৯০ লাখ টন আলু উৎপন্ন হয়েছিল। চলতি ২০২১ মৌসুমে ১ কোটি ১০ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়েছে। মূলত অধিক জমিতে আলু চাষ হওয়া, শীতকাল দীর্ঘায়িত হওয়া, আলুর ক্ষেতে রোগবালাই কম থাকা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। মার্চ ও এপ্রিলে দেশের ৪০০ হিমাগারে প্রায় ৫৫ লাখ টন ভোগ্য আলু, বীজআলু, শিল্পে ব্যবহূত আলু ও রফতানিযোগ্য আলু সংরক্ষিত রয়েছে। আগামী দুই মাসে মজুদ আলুর মাত্র ২০ শতাংশ বিপণন হতে পারে। এর সঙ্গে বীজআলুর পরিমাণ বাদ দিলেও হিমাগারে পড়ে থাকবে প্রায় ২০ লাখ টন। তাই সংকট মেটাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারিভাবে আলু কিনে তা ত্রাণকাজে ব্যবহার করা, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ড এবং ওএমএসের ত্রাণসামগ্রীর সঙ্গে আলু বিতরণের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য হিসেবে আলুর ব্যবহার বাড়াতে সরকারিভাবে বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রম নিতেও সুপারিশ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে বাড়তি উৎপাদিত আলুর নিরাপদ সংরক্ষণ ও পরবর্তী সময়ে আলুর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হিমাগারগুলোতে আলু মজুদ রাখা হয়। স্বাভাবিক সময়ে আগস্টের মধ্যেই হিমাগার থেকে মজুদ আলুর প্রায় ৮০ শতাংশ বাজারে চলে যায়। আর পাঁচ-সাত লাখ টন বীজআলু মজুদ রাখতে হয়। এর পরও কিছু আলু থাকলে সেগুলো নিয়ে খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হয় না হিমাগার মালিক, ব্যবসায়ী ও কৃষকদের। কিন্তু চলতি বছর আলুর দাম ও চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তার ওপর রফতানি চাহিদা কমে যাওয়া ও আলুর বিকল্প ব্যবহার না থাকায় বাজারে আলুর চাহিদা এখন প্রায় শূন্যের কোটায়। আলু উৎপাদন বাড়ানো নিয়ে সরকার পদক্ষেপ নিলেও পণ্যটির বিপণন ও বিকল্প ব্যবহার বাড়াতে উদ্যোগ সীমিত বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই এবার বাড়তি মজুদ নিয়ে হিমাগার মালিক ও কৃষক উভয়ই সংকটের মধ্যে পড়ে গেছেন।
এ বিষয়ে বিসিএসএ সভাপতি মো. মোশারফ হোসেন বলেন, এক মাস ধরে হিমাগার থেকে আলু অত্যন্ত ধীরগতিতে বাজারজাত হচ্ছে, যা হতাশাব্যঞ্জক ও উদ্বেগজনক। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে চলতি বছর প্রায় ২০ লাখ টন অবিক্রীত ও উদ্বৃত্ত থাকবে। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে আলু রফতানি বাড়ানোর উদ্যোগের পাশাপাশি খোলাবাজারে ও সরকারি বিভিন্ন কর্মকা-ে আলু বিক্রির সুযোগ করে দেয়া প্রয়োজন। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে আলুর স্টার্চ, চিপস, ফ্লেক্স ও বিকল্প খাদ্য তৈরিতে শিল্প স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এ উদ্বৃত্ত আলুর ব্যবহার সম্পর্কে সময়মতো পদক্ষেপ নেয়া না হলে গত বছরের মতো বাজারে ধস নামবে। ফলাফল হিসেবে আগামীতে কৃষকরা আলু উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হবেন। উৎপাদিত উদ্বৃত্ত আলু যেন উদ্বেগের কারণ না হয়, সেজন্য উৎপাদিত আলুর সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
হিমাগার-সংশ্লিষ্টরা আলু রফতানির ওপর জোর দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন। তারা বলছেন, এ উদ্বৃত্ত আলু সুষ্ঠু ব্যবহারের পদক্ষেপ নেয়া না হলে ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের মতো প্রান্তিক কৃষক, ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ী, ব্যাংক ও হিমাগার মালিকরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হবেন। আলু উৎপাদনে কৃষকদের ব্যয় হয়েছে প্রতি কেজিতে ১৮ টাকা। কিন্তু বর্তমানে হিমাগার পর্যায়ে আলুর বাজারদর সংরক্ষণ ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ কেজিপ্রতি গড়ে মাত্র ১৩ টাকা। আলু বাজারজাতের জন্য সময় আছে আর মাত্র চার মাস। এর মধ্যে নি¤œদরের কারণে সংরক্ষিত আলু বাজারজাত করা সম্ভব না হলে বিপুল পরিমাণ আলু অবিক্রীত থাকার সম্ভাবনা তৈরি হবে। এজন্য আলুকে দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন হিমাগার মালিকরা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com