ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের চরগঙ্গাপুর গ্রামের দিনমজুর তাজল ইসলাম ও বিলকিস বেগম দম্পতির বসবাস। ২ছেলে ৩ মেয়ে। যাদের মধ্যে মেয়ে সুমাইয়া(৮) ও ছেলে রিয়াজ(৭)। দু’জন প্রতিবন্ধি। তাঁদের মুখে এখনো খাবার তুলে দিতে হয়। গোসলও করাতে হয়। কারণ দুজনই শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। একমাত্র উপার্জনের বাহন পা হারানো স্বামী তাজল বর্তমানে ক্যান্সারে আক্রান্ত।সে এখন অন্যের বোঝা। চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব। দুমুঠো ভাত জুটছে না তাঁদের। হতদরিদ্র পরিবারটি এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিলকিস বেগম জানান,পাশ্ববর্তী লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের তাজল ইসলামের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামীর জায়গা জমি না থাকার শ্বশুড় বাড়িতে থাকতেন। পেশায় জেলে। ২ ছেলে ৩ মেয়ে।বড় ছেলে বউসহ ঢাকায় থাকেন। বড় মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে। সংসারটা কোন মতে চলছিল। ৩ বছর আগে স্বামীর পায়ে টিউমার হয়। ডাক্তারের কথা মতো অপারেশন হয়।কিছুদিন পর ওই স্থানে পঁচন দেখা দেয়। ধরা পড়ে ক্যান্সার। অবশেষে ৪ মাস আগে ডান পা কেটে ফেলতে হয়। আয় করা মানুষটা হয়ে যায় প্রতিবন্ধি। অভাবের কষ্টে আমাদেরকে ফেলে চলে যায় ভাইদের কাছে। থেমে যায় সংসারের চাকা। অভাবের জ্বালায় দিশেহারা হয়ে পড়ি। ৩য় মেয়েটাকে ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করার জন্য পাঠাই। গার্মেন্টসে কাজ করা মিতু আক্তার বলেন, সংসারের অভাব দেখে পড়াশুনা বন্ধ করে দেই।বছরখানের আগে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে ১২ হাজার টাকা বেতনে চাকুরি করি। ওই টাকার কোনমতে চলছে সংসার। অভাবের কষ্ট সইতে না পেয়ে বাবা আমাদেরকে ফেলে চলে যায়।তিনি বলেন, একটি পরিবারে ৩ জন প্রতিবন্ধি হওয়ার পরও আমরা কোন সরকারি সহযোগিতা পাই না। বিলকিস বেগম বলেন, আমাদের অভাব-অনটনের কথা জনপ্রতিনিধিরা সবাই জানেন। কিন্তু কেউ সহযোগিতা করেনি। বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড কিংবা সরকারের কোনো সাহায্য পাচ্ছি না। সাচড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সেলিম সিকদার বলেন, আমি জানতে পেরেছি ওই দম্পতি সত্যিই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁদেরকে সরকারি সুবিদার সহায়তা দিতে চেষ্টা করব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: রায়হান-উজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি শুনছি। তাদেরকে সাময়িকভাবে আর্থিক সহযোগিতা করেছি। তাঁর জন্য আরোও ভালো কিছু করার চেষ্টা করব।