রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চের ছিঁড়ে আসা রশির আঘাতে একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচ যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) রাতে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
মামলার আসামি করা হয়েছে ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার আবদুর রউফ (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মোহাম্মদ সেলিম হাওলাদার (৫৪), লঞ্চের পরিচালক শাহরুখ খান (৭০), তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান (২৭)।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, এমবি ফারহান – ৬ লঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহেলা এবং বেপরোয়া গতিতে লঞ্চ চালানোর ফলে ও এমবি তাসরিফ – ৪ এর কর্মকর্তাদের অবহেলায় পুরনো রশির ব্যবহার করার কারণে এমবি তাসরিফ-৪ রশি ছিঁড়ে গিয়ে রশির আঘাতে ৫ জন নিহত হন।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ বলেন, ঘটনার পরই বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই পাঁচজনকে আটক করা হয়েছিল। বর্তমানে তারা নৌ পুলিশের হেফাজতে আছেন।
এদিকে সদরঘাটে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক হলেন, বিআইডব্লিউটিএর ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামে দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। বেলা তিনটার কিছুক্ষণ আগে এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ পন্টুনে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় এমভি তাশরিফের রশি ছিঁড়ে লঞ্চে ওঠার জন্য পন্টুনে অপেক্ষমাণ পাঁচ যাত্রীকে আঘাত করে। এতে তারা পন্টুনে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাদের পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।